alternatetext
কমলদহ ঝর্ণা ও ট্রেইল

কমলদহ ঝর্ণা ও ট্রেইল ভ্রমণ গাইডলাইন, সীতাকুণ্ড চট্টগ্রাম

সীতাকুণ্ড ও মীরসরাই রেঞ্জে ছোট বড় অনেক গুলো ট্রেইল, ঝর্ণা, ঝিরি ও ক্যাসকেড রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কমলদহ ঝর্ণা ও ট্রেইল। কমলদহ ট্রেইলে বেশ কয়েকটি ঝর্ণা রয়েছে। এই ট্রেইল তুলনামূলক সহজ হওয়ায় কম সময়ে কমলদহ ট্রেইলের সবগুলো ঝর্ণা দেখে আসতে পারবেন।

কমলদহ ঝর্ণা ও ট্রেইল কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে কমলদহ ঝর্ণায় যেতে চাইলে প্রথমে আপনাকে সীতাকুণ্ডের বড় দারোগাহাট বাজারে আসতে হবে। ঢাকার সায়েদাবাদ, আরামবাগ ও ফকিরাপুল বাস স্টেশন থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে চড়ে সীতাকুণ্ডের বড় দারোগাহাট বাজার নামতে হবে।

বাসের সুপারভাইজারকে আগেই বলে রাখবেন আপনাকে সীতাকুণ্ড উপজেলার বড় দারোগাহাট বাজার নামিয়ে দেয়। ঢাকা থেকে বাসে বড় দারোগাহাট বাজার আসতে ৫ ঘন্টার মতো সময় লাগবে। এসি, নন-এসি বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৫০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা।

BM Khalid Hasan Sujon

ঢাকা থেকে ট্রেনে: ঢাকা থেকে সীতাকুণ্ডের বড় দারোগাহাট বাজার পর্যন্ত সরাসরি কোনো ট্রেন সার্ভিস নেই। তাই ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সপ্রেস বাদে চট্টগ্রামগামী যেকোনো ট্রেন ফেনী রেলস্টেশন থামে। ফেনী রেলস্টেশন নেমে সিএনজি বা অটোরিকশা করে মহিপাল যাবেন। সেখান থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে চড়ে বড় দারোগাহাট বাজার নেমে যাবেন। জনপ্রতি বাস ভাড়া ১০০ টাকা।

বড় দারোগাহাট বাজার থেকে কমলদহ ঝর্ণা ও ট্রেইল

বড় দারোগাহাট বাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে ঢাকার দিকে কয়েক মিনিট হাঁটলে রাস্তার ডানপাশে একটি ইট ভাটা দেখতে পাবেন। ইট ভাটার পাশ দিয়ে একটি মাটির রাস্তা চলে গেছে। এই মাটির রাস্তা ধরে প্রায় ২০ মিনিটের পথ হাঁটলে ঝিরিপথ দেখতে পাবেন।

এই ঝিরিপথ ধরে কমলদহ ঝর্ণায় যেতে হবে এবং এখান থেকে আপনার কমলদহ ট্রেইল শুরু। ঝিরিপথ ধরে আপনাকে প্রায় ১ ঘন্টা পথ হাঁটতে হবে। এই ঝর্ণার সর্বমোট ৩ টি ধাপ রয়েছে। নিচে থেকে ঝর্ণার প্রথম ধাপ দেখা যায়। বাকি ২ টি ধাপ দেখতে হলে ঝর্ণার উপরের অংশে উঠতে হবে।

ঝর্ণার উপরে উঠে ঝিরিপথ দিয়ে কিছু পথ এগিয়ে গেলে দেখতে পাবেন ঝিরিপথ দুই ভাবে বিভক্ত হয়ে গেছে। আপনি বাম পাশের ঝিরিপথ দিয়ে এগিয়ে যাবেন। কিছুদূর এগিয়ে গেলে আবার দেখতে পাবেন ঝিরিপথ দুই ভাবে বিভক্ত হয়ে গেছে। আপনি বাম দিকের ঝিরিপথ দিয়ে এগিয়ে গেলে ছাগলকান্দা ঝর্ণা দেখতে পাবেন। আর ডান দিকের ঝিরিপথ দিয়ে এগিয়ে গেলে নাম না জানা কয়েকটি ঝর্ণা দেখতে পাবেন।

BM Khalid Hasan Sujon

কোথায় খাবেন

সীতাকুণ্ড বাজারে খাবার জন্য মোটামুটি মানের কয়েকটি খাবার হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে আল-আমিন হোটেলের খাবারের মান ভালো। আপনি এখানে থেকে সকালের নাস্তা সহ দুপুর ও রাতে খাবার জন্য মাছ, মাংস, ডাল, ভর্তা, সবজি, সালাদ ইত্যাদি পেয়ে যাবেন।

কোথায় থাকবেন

বড় দারোগাহাট বাজার থাকার জন্য তেমন ভালো মানের আবাসিক হোটেল নেই। তাই আপনাকে সীতাকুণ্ড পৌরসভার বাজার আসতে হবে। এখানে থাকার জন্য মোটামুটি মানের কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। সীতাকুণ্ড আবাসিক হোটেল ভাড়া জানুন

এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া উল্লেখযোগ্য (রুম ভাড়া ৭০০ থেকে ১,২০০ টাকা) মোবাইল নাম্বার 01991-787979, 01816-518119। এছাড়া হোটেল সাইমুন, রুম ভাড়া ৪০০ থেকে ৭০০০ টাকা। মোবাইল নাম্বার 01827-334082, 01825-128767.

এছাড়া সীতাকুণ্ডে সরকারি ডাকবাংলো রয়েছে। অনুমতি নিয়ে কম খরচে সেখানে থাকতে পারবেন। যারা ভালো মানের হোটেলে থাকতে চাচ্ছেন তারা বড় দারোগাহাট বাজার থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে ভালো মানের হোটেলে থাকতে পারবেন।

BM Khalid Hasan Sujon

ভ্রমণ টিপস ও পরামর্শ

কমলদহ ঝর্ণায় যাওয়ার উপযুক্ত সময় বর্ষাকাল। কারণ অন্য সময় ঝর্ণায় পানি কম থাকে। তাই বর্ষা মৌসুমে যাওয়া ভালো। সব সময় চেষ্টা করবেন দলগত ভাবে ঘুরতে যাওয়ার।

ঝর্ণার ট্রেইল সহজ মনে হলেও বিপদ সব সময় ওৎ পেতে থাকে। তাই সর্বদা সাবধানতা অবলম্বন করবেন। ঝর্ণার পথ চিনতে সমস্যা হলে প্রয়োজনে স্থানীয় মানুষের সাহায্য নিবেন এবং প্রয়োজনে স্থানীয় কাউকে কম টাকায় গাইড নিতে পারেন।

ঝর্ণায় যাওয়ার পথে আশেপাশে কোনো দোকান নেই। তাই সাথে করে শুকনো খাবার ও পানির বোতল নিয়ে যাবেন। যারা ক্যাম্পিং করতে চান তারা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সাথে নিয়ে যাবেন।

সীতাকুণ্ডের দর্শনীয় স্থান

কমলদহ ঝর্ণা ছাড়াও আশেপাশে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। হাতে সময় নিয়ে এসব দর্শনীয় স্থান সমূহ ঘুরে দেখে আসতে পারেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চন্দনাথ পাহাড়, বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত, গুলিয়াখালি সমুদ্র সৈকত, সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক, রুপসী ঝর্ণা, সোনাইছড়ি ট্রেইল ইত্যাদি।

Similar Posts