ছাগলকান্দা ঝর্ণা যাওয়ার উপায় ও খরচ
পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলায় ছাগলকান্দা ঝর্ণা (Chagolkanda waterfalls) অবস্থিত। মূলত এটি একটি ক্যাসকেড। এই ঝর্ণার আরেক নাম কমলক ঝর্ণা। এর ট্রেইল মোটামুটি অপরিচিত। এই ট্রেইলে বড় কমলদহ ঝর্ণা আছে। বড় কমলদহ ঝর্ণা ছাড়াও মাঝারি ও ৪-৫ টা বড় ঝর্ণা আছে।
৩ ধাপের এই ঝর্ণা নিচে থেকে ১ টি ধাপ দেখতে পাবেন। বাকি ২ টি ধাপ দেখতে হলে সাবধানে উপরে উঠতে হবে। ঝর্ণার শীতল পানিতে গোসল করে উপরে উঠে হাঁটতে থাকবেন। পায়ে হেঁটে ৩০ মিনিটের পথ যেয়ে দেখবেন পথটি ইংরেজি অক্ষর Y আকার ধারণ করেছে।
Y আক্রতির পথ থেকে হাতের বামদিকে হাঁটবেন। সামনে কিছু দুর এগিয়ে গেলে দেখবেন পথটি আবার ইংরেজি অক্ষর Y আকার ধারণ করেছে। আবারও হাতের বাম পাশ দিয়ে হাঁটা শুরু করবেন। সামনে কিছু পথ এগিয়েই ছাগলকান্দা ঝর্ণা দেখতে পাবেন।
ছাগলকান্দা ঝর্ণা যাওয়ার উপায়
ঢাকা থেকে ছাগলকান্দা ঝর্ণায় যাওয়ার জন্য ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, আব্দুল্লাহপুর বাস টার্মিনাল থেকে হানিফ, ঈগল, সোহাগ, শ্যামলী, এস আলম, গ্রীনলাইন, সৌদিয়া, ইউনিক পরিবহন সহ চট্টগ্রামগামী যেকোনো পরিবহনে করে সীতাকুণ্ডের বড় দারোগাহাট বাজার নেমে যাবেন। বাসের সুপারভাইজারকে আগেই বলে রাখবেন আপনাকে সীতাকুণ্ডের বড় দারোগাহাট বাজার নামিয়ে দিবে। এসি, নন-এসি বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৮০০ থেকে ১,২০০ টাকা।
ট্রেনে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর এক্সপ্রেস চড়ে ফেনী রেলস্টেশন নেমে যাবেন। রেলস্টেশন থেকে সিএনজি করে ২৫ টাকা ভাড়া দিয়ে মহিপাল বাস স্টেশন আসবেন। মহিপাল বাস স্টেশন থেকে চট্টগ্রামগামী বাসে চড়ে ৯০ টাকা ভাড়া দিয়ে সীতাকুণ্ডের বড় দারোগাহাট বাজার নেমে যাবেন।
চট্টগ্রাম শহরের অলংকার মোড়, এ কে খান মোড় থেকে সীতাকুণ্ডগামী লোকাল বাসে চড়ে বড় দারোগাহাট বাজার নেমে যাবেন। এছাড়া চট্টগ্রাম শহরের যেকোনো স্থান থেকে রিজার্ভ সিএনজি ভাড়া করে বড় দারোগাহাট বাজার আসতে পারবেন।
বড় দারোগাহাট বাজার থেকে ছাগলকান্দা ঝর্ণা যাওয়ার উপায়
বড় দারোগাহাট বাজার থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে ঢাকার দিকে কিছু পথ হেঁটে গেলে একটি ইয়ট ভাটা দেখতে পাবেন। ইট ভাটার ডান পাশ দিয়ে একটি মাটির রাস্তা পাবেন। এই মাটির রাস্তা দিয়ে ২৫-৩০ মিনিট হাঁটার পর ঝিরি পথ পেয়ে যাবেন।
এই ঝিরি পথ ধরে হাঁটলে কমলদহ ঝর্ণা দেখতে পাবেন। ঝিরি পথ ধরে যাওয়ার সময় আপনার মত অনেক পর্যটকদের দেখা পাবেন। তাই পথ হারানোর ভয় নেই। পথ চিনতে সমস্যা হলে স্থানীয় মানুষের সাহায্য নিবেন। কমলদহ ঝর্ণা পার হয়ে ঝিরি ধরে উপরের দিকে উঠলে ছাগলকান্দা ঝর্ণায় পৌঁছে যাবেন।
ঝর্ণার উপরে উঠে ছোট একটা ক্যাসকেড পার হয়ে ঝিরি পথ ধরে সামনে এগিয়ে গেলে দেখতে পাবেন ঝিরিপথ দুভাগে ভাগ হয়ে গেছে। আপনি বাম পাশের ঝিরি ধরে সামনে এগিয়ে যাবেন। সামনে এগিয়ে গিয়ে আবার ঝিরি দুভাগে ভাগ হয়ে গেছে। আবারো বাম দিকের ঝিরিপথ ধরে একটু হাঁটলে কাঙ্ক্ষিত ছাগলকান্দা ঝর্ণার দেখে পেয়ে যাবেন।
কোথায় খাবেন
খাবার জন্য বড় দারোগাহাট বাজারে তেমন খাবার হোটেল নেই। তাই আপনাকে সীতাকুণ্ড বাজারে অবস্থিত হোটেল সৌদিয়া, হোটেল আল-আমিন ও আপন রেস্তোরাঁ থেকে খাবার খেতে হবে। এখানে খাবার মেন্যু হলো সাদা ভাত, ডাল, সবজি, ভর্তা, ডিম, মাংস, মাছ ইত্যাদি।
কোথায় থাকবেন
থাকার জন্য সীতাকুণ্ড বাজার মোটামুটি মানের কয়েকটি আবাসিক হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া, রুম ভাড়া ৭০০ টাকা থেকে ১,৬০০ টাকা। যোগাযোগ মোবাইল নাম্বার 01991-787979, 01816-518119।
হোটেল সাইমুন, রুম ভাড়া ৪০০ টাকা থেকে ১,০০০ টাকা। যোগাযোগ মোবাইল নাম্বার 01825-128767, 01827-334082. এছাড়া সীতাকুণ্ড সরকারি ডাকবাংলো রয়েছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে সেখানে কম খরচে থাকতে পারবেন।
সীতাকুণ্ড দর্শনীয় স্থান
সীতাকুণ্ড অনেক দর্শনীয় স্থান সমূহ রয়েছে। হাতে কয়েকদিন সময় নিয়ে এসব দর্শনীয় স্থান দেখে আসতে পারেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য চন্দ্রনাথ মন্দির, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, রুপসী ঝর্ণা, সোনাইছড়ি ট্রেইল, খৈয়াছড়া ঝর্ণা, কমলদহ ঝর্ণা, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা, সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক, সহস্রধারা ঝর্ণা ২, সুপ্তধারা জলপ্রপাত ইত্যাদি।