alternatetext
জিন্দা পার্ক

জিন্দা পার্ক, নারায়ণগঞ্জ

জিন্দা পার্ক (Zinda park) বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। ১৯৮১ সালে ১০০ বিঘা জায়গায় উপর অগ্রপথিক পল্লী সমিতি এই পার্কটি প্রতিষ্ঠিত করে। বর্তমানে এই পার্কটি নারায়ণগঞ্জ জেলার অন্যতম একটি আকর্ষণস্থল।

শুরুতে এই পার্কের নাম ছিলো শান্তিকানন, পরে নাম পরিবর্তন করে জিন্দা পার্ক নামকরণ করা হয়। পার্কের শুরুতে এখানে একটি অফিস ও বিদ্যালয় স্থাপনের মাধ্যমে কাজ শুরু করা হয়। পরে পর্যায়ক্রমে মসজিদ, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, পাঠাগার ইত্যাদি গড়ে তোলা হয়।

এই পার্ক প্রায় ৩৩ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত। এখানে প্রায় ২৫০ প্রজাতির প্রায় ২৫,০০০ গাছ রয়েছে। পার্কের মোট জায়গায় ২৫ শতাংশ জায়গা নিয়ে ৫টি জলাধার রয়েছে। এছাড়া মসজিদ, ঈদগাহ, কমিউনিটি ক্লিনিক, বিদ্যালয়, পাঠাগার, অফিস, পাঠাগার সহ বেশ কয়েকটি স্থাপনা রয়েছে।

আরো রয়েছে হ্রদের উপর ব্রিজ, ফুলের বাগান, বৃক্ষঘর, টিলা, ক্যান্টিন, মিনি চিড়িয়াখানা, বড় সান বাধানো পুকুর, পুকুরের উপর সাঁকো, মার্কেট ও নৌ ভ্রমণের জন্য পার্কের লেকে রয়েছে সুসজ্জিত নৌকা। এসব বিভিন্ন স্থাপনার নির্মাণশৈলী আপনাকে সত্যিই মুগ্ধ করবে।

BM Khalid Hasan Sujon

ঢাকা থেকে মাত্র ৩৭ কিলোমিটার দূরত্ব হওয়ায় পিকনিক বা ডে আউট ট্যুরের জন্য নিশ্চিতে বেছে নিতে পারেন এই পার্কটিকে। ঢাকা থেকে দিনে গিয়ে দিনে ঘুরে ফিরে আসতে পারবেন। সবুজে ঘেরা পার্কটি আপনার মনকে প্রশান্তিতে ভরিয়ে দিবে।

জিন্দা পার্ক কোথায় অবস্থিত

জিন্দা পার্ক বাংলাদেশ নারায়ণগঞ্জ জেলার রূপগঞ্জ উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়নে অবস্থিত। পার্কটি রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৭ কিলোমিটার দূরে নতুন স্যাটেলাইট শহর পূর্বাচলের উত্তর-পূর্ব কোণো ঢাকা ইস্টার্ন বাইপাস রোডের পাশে অবস্থিত।

কিভাবে যাব

জিন্দা পার্ক যাবার জন্য সবচেয়ে সহজ রাস্তা কুড়িল বিশ্বরোড পূর্বাচল হাইওয়ে। ৩০০ ফিট রাস্তা দিয়ে পার্কে যেতে চাইলে রাজধানী ঢাকার যেকোনো স্থান থেকে কুড়িল বিশ্বরোড আসতে হবে।

BM Khalid Hasan Sujon

কুড়িল রেল লাইনের পাশ থেকে বিআরটিসি কাউন্টার থেকে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত যাওয়া জন্য টিকেট কিনবেন। বাস টিকেট মূল্য ২৫ টাকা। বাসে চড়ে কাঞ্চন ব্রিজের আগে বাইপাস রোড নেমে যাবেন। সেখান থেকে অটোরিকশা বা সিএনজি নিয়ে জিন্দাপার্ক যেতে পারবেন।

অটোরিকশা বা সিএনজিতে জনপ্রতি ভাড়া লাগবে ৩০ টাকা। অটোরিকশা বা সিএনজি রিজার্ভ ভাড়া নিলে ভাড়া ১২০ টাকা। রিজার্ভ নেওয়ার আগে অবশ্যই ভাড়া দামাদামি করে নিবেন।

৩০০ ফিট রাস্তার মাথা থেকে লোকাল সিএনজি বা লোকাল প্রাইভেট কারে ৫০-৬০ টাকা দিয়ে কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত যেতে পারবেন। কাঞ্চন ব্রিজ আগে বাইপাস মোড়ে নেমে সিএনজি করে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে পার্কে যেতে পারবেন। আবার কুড়িল ৩০০ ফিট থেকে সরাসরি সিএনজি ভাড়া নিয়ে পার্কে যেতে পারবেন।

এছাড়া ঢাকা থেকে বাসে চড়ে কাঁচপুর ব্রিজ পার হয়ে ভুলতা নেমে যাবেন। ভুলতা থেকে মহানগর বাইপাস হয়ে জিন্দা পার্ক যেতে পারবেন। ভুলতা থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে এই পার্ক অবস্থিত।

BM Khalid Hasan Sujon

এছাড়া ঢাকার টঙ্গী মিরের বাজার দিয়ে বাইপাস রাস্তা ধরে জিন্দা পার্কে যেতে পারবেন। টঙ্গী থেকে পার্কের দূরত্ব ২৮ কিলোমিটার। সিএনজি বা প্রাইভেট গাড়ি নিয়ে যেতে পারবেন।

পার্কের সময়সূচী ও টিকেট মূল্য

ঈদের দিন ছাড়া সপ্তাহের ৭ দিনই জিন্দা পার্ক পর্যটকদের জন্য সকাল ৭ টা থেকে মাগরিব পর্যন্ত খোলা থাকে। কোনো বিশেষ কারণে যদি পার্ক বন্ধ থাকে তাহলে আগেই তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে নোটিশ দেওয়া হয়।

জিন্দা পার্কের প্রবেশ টিকেট মূল্য সাপ্তাহিক ছুটি ও ঈদের দিনে জনপ্রতি ১৫০ টাকা। অন্যান্য দিন জনপ্রতি ১০০ টাকা এবং ৫ বছরের নিচে বাচ্চাদের জন্য প্রবেশ টিকেট মূল্য ৫০ টাকা।

এছাড়া লাইব্রেরি ফি ১০ টাকা এবং গাড়ি পাকিং ফি ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত।

খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা

জিন্দা পার্কের ভিতর খাওয়ার জন্য রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এই রেস্টুরেন্টে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ধরনের খাবার খেতে পারবেন। খাবার জন্য এখানে ২৩০ টাকা থেকে শুরু করে ৬৯০ টাকার মধ্যে বিভিন্ন প্যাকেজ পাবেন।

আপনার পছন্দ অনুযায়ী একটি প্যাকেজ নিয়ে খাবার খেতে পারবেন। খাবারের তালিকায় ভাত/পোলাও, রোস্ট, মাছ, খাসি, গরু, সবজি, সালাদ, ডিম ভূনা, পেপসি/সেভেন-আপ, পানি, দই/ফিরনী।

এছাড়া যারা পার্ক থেকে বাহিরে এসে খেতে চাচ্ছেন তারা পার্কের সামনে অবস্থিত “নাহার হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট” থেকে ২০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকার ভালো মানের খাবার খেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

পার্কটি ঢাকার খুব পাশে হওয়ার অধিকাংশ পর্যটকরা দিনে এসে দিনে ঘুরে দেখে আবার ঢাকায় ফিরে যায়। আর যারা এখানে রাত্রিযাপন করতে চাচ্ছেন তারা “মহুয়া গেস্ট হাউজ” এ রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

জিন্দা পার্কের যোগাযোগের ঠিকানা

আরো পড়ুন

Similar Posts