alternatetext
মালদ্বীপ ভ্রমণ খরচ

বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপ ভ্রমণ খরচ ২০২৫

মালদ্বীপ (Maldives) প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর অসংখ্য দ্বীপের দেশ। ছোট ছোট ১২০০ টির বেশি দ্বীপ নিয়ে মালদ্বীপ গঠিত। দেশ বিদেশের পর্যটকদের আকর্ষণ এই দ্বীপের প্রতি। বাংলাদেশ থেকে যারা মালদ্বীপ ভ্রমণে যেতে চাচ্ছেন তাদের মধ্যে অনেকে জানতে চাচ্ছেন বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপ ভ্রমণ খরচ কত, কিভাবে যাব, কোথায় থাকবো, কোথায় খাবো সহ বিস্তারিত তথ্য।

ছোট ছোট অসংখ্য দ্বীপের সম্মনয়ে গঠিত মালদ্বীপ দেশটি এতোটাই সুন্দর যে টানা চারবার পর্যটনে বিশ্বের এক নাম্বার হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০২০, ২০২১, ২০২২ ও ২০২৩ সালে “ওয়ার্ল্ড বেস্ট টুরিস্ট ডেসটিনেশন” হিসাবে ঘোষণা করেছে ওয়ার্ল্ড ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন।

মালদ্বীপ ভ্রমণের প্রধাণ আকর্ষণ এখানকার সৈকতে বসে সমুদ্রের গাড় নীল রঙের পানি উপভোগ করা এবং মালে সিটি ঘুরে দেখা। এছাড়া ওয়াটার অ্যাক্টিভিটি যার মধ্যে রয়েছে টার্টেল, স্কুবা ডাইভিং, প্যারাসেইলিং ও স্নরকেলিং উইথ শার্ক উল্লেখযোগ্য।

বর্তমানে বাংলাদেশী পর্যটকেরা ভারতীয় ভিসা বন্ধ হওয়ায় ভ্রমণের জন্য কম খরচে ছুটে যাচ্ছে মালদ্বীপ ভ্রমণে। বিশেষ করে কাপলদের জন্য হানিমুন করার সেরা স্থান হল এই মালদ্বীপ।

BM Khalid Hasan Sujon

ভ্রমণ টিপসের আজকের আর্টিকেলে জানাবো বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপ ভ্রমণ খরচ কত টাকা, কিভাবে যাবেন, কোথায় থাকবেন, কোথায় খাবেন, খরচ বাঁচাতে কী কী করবেন সহ বিস্তারিত ভ্রমণ পরামর্শ।

মালদ্বীপ ভ্রমণ

বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপ ভ্রমণ খরচ ২০২৫

সাধারণত মালদ্বীপে থাকা ও খাওয়া খরচ অনেক বেশি। মালদ্বীপ যাওয়ার জন্য বিমানে ঢাকা থেকে মালদ্বীপ যাওয়া-আসা ৪৫,০০০-৬০,০০০ টাকা খরচ হবে। বিমান ভাড়া নির্ভর করবে আপনি কত আগে টিকেট বুকিং করবেন তার উপর।

আইল্যান্ডের কাছাকাছি কোনো রিসোর্টে না থেকে শহরের মধ্যে কোনো হোটেলে থাকলে প্রতিরাতে ৪,০০০ টাকা থেকে ৭,০০০ টাকায় দুইজন থাকতে পারবেন। আর যদি আইল্যান্ডের কাছাকাছি কোনো রিসোর্টে থাকেন তাহলে জনপ্রতি প্রতিরাত ১৫,০০০-২৫,০০০ টাকা খরচ হবে।

BM Khalid Hasan Sujon

সাধারণ মানের বাঙালি খাবার খেতে প্রতিবেলা ৫০০-৬০০ টাকা খরচ হবে। মালদ্বীপের ছোট ছোট দ্বীপ গুলো স্পিডবোটের মাধ্যমে ঘুরতে চাইলে ১৬,০০০-১৭,০০০ টাকা খরচ হবে। ব্যাক্তিগত কেনাকাটা আপনার উপর নির্ভর করবে।

যারা কম খরচে মালদ্বীপ ভ্রমণ করতে চান তারা যত আগে সম্ভব বিমান টিকেট বুকিং করবেন। থাকার জন্য লোকাল হোটেল, রিসোর্ট বা গেস্ট হাউজে থাকার চেষ্টা করবেন। এক দ্বীপ থেকে অন্য দ্বীপে যাওয়ার জন্য সরকারি ফেরি ব্যবহার করবেন।

কিভাবে মালদ্বীপ যাবেন

ট্যুরিস্ট দেশ হিসাবে মালদ্বীপ ভিসা প্রসেসিং একদম সহজ। বিশ্বের সব দেশ থেকে মালদ্বীপ অন এরাইভাল ভিসা পাওয়া যায়। এই ভিসার জন্য পাসপোর্ট, ইমুগা (ট্রাভেলার ডিক্লেয়ারেশন), রিটার্ন বিমান টিকেট ও হোটেল বুকিং ডকুমেন্ট প্রয়োজন হয়।

ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি মালদ্বীপের ভোলানা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট যাওয়ার জন্য কয়েকটি ফ্লাইট যাতায়াত করে। অধিকাংশ বাংলাদেশীরা মালদ্বীপিয়ান এয়ার ও শ্রীলস্কান এয়ার লাইনস এ বেশি যাতায়াত করে।

BM Khalid Hasan Sujon

ঢাকা থেকে মালদ্বীপ ফ্লাইটে যেতে ৪-৫ ঘন্টা সময় লাগে। মালদ্বীপ এয়ারপোর্টে পৌঁছে আপনাকে ইমিগ্রেশন সম্পূর্ণ করতে হবে। ইমিগ্রেশন সম্পূর্ণ করতে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো সাথে রাখুন তাহলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ইমিগ্রেশন সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।

আবার আপনি চাইলে ঢাকা থেকে প্রথমে শ্রীলস্কার বান্দারনায়াকে আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট থেকে ট্রানজিট স্টেশন শেষ করে অন্য ফ্লাইটে মালদ্বীপ যেতে পারবেন। এতে আপনার খরচ কম হবে এবং সাথে দুইটা দেশ ঘোরা হবে। শ্রীলস্কা থেকে মালদ্বীপ যেতে ফ্লাইটে ১ ঘন্টা সময় লাগবে।

ইমিগ্রেশন শেষে আপনার লাগেজ নিয়ে এয়ারপোর্টের সাথে অবস্থিত ফেরি ঘাট বা এয়ারপোর্টের বাহিরে থেকে ট্যাক্সি ভাড়া করে সরাসরি হোটেলে চলে যাবেন।

কোথায় থাকবেন

মালে শহরে থাকার জন্য অনেক হোটেল ও রিসোর্ট রয়েছে। কম খরচে থাকার জন্য হোটেল জেন মালে, সামারসেট ইন, হোটেল ওক্টেভে, দা মেলরসে ভালো সার্ভিস পাবেন। এসব হোটেল গুলোতে এসি রুম, ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক সহ প্রয়োজনীয় সব কিছু পাবেন।

এছাড়া মালে শহরে যারা রিসোর্টে থাকতে চান তারা হলিডে আইল্যান্ড রিসোর্ট, সান আইল্যান্ড এন্ড স্পা, কুরুম্বা মালদিপ, বান্দোস আইল্যান্ডে থাকতে পারেন। এসব রিসোর্ট গুলোতে রাত্রিযাপন করার পাশাপাশি খাবার ব্যবস্থা থাকে।

কোথায় খাবেন

মালদ্বীপের সব হোটেল ও রিসোর্টে গেস্টদের জন্য কমপ্লিমেন্টারি ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ ও ডিনারের ব্যবস্থা থাকে। এছাড়া হোটেলের আশেপাশে খাবার জন্য অনেক রেস্তোরাঁ পাবেন। সেখান থেকে খাবার খেতে পারবেন।

মালদ্বীপের স্থানীয় খাবার আপনার কাছে ভালো নাও লাগতে পারে। তাই বাঙালি খাবার খেতে মালে শহরের “ঢাকা ফুড” নামে বাঙালি রেস্টুরেন্ট থেকে কম খরচে বাঙালি খাবার খেতে পারবেন।

সাধারণত প্রাইভেট আইল্যান্ডের রিসোর্ট গুলোতে খাবারের দাম অনেক বেশি কিন্তু তাদের খাবারের মান অনেক ভালো। মেন্যু দেখে খাবার অর্ডার করলে খাবার পেয়ে যাবেন।

খরচ বাঁচাতে কী কী করবেন

  • কমপক্ষে ১-২ মাস আগে বিমান টিকেট বুকিং দিবেন।
  • মালদ্বীপে যাতায়াত করার জন্য সরকারি ফেরি ব্যবহার করুন।
  • প্রাইভেট রিসোর্টে না থেকে হোটেল বা গেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করুন।
  • মালদ্বীপের স্থানীয় খাবার না খেয়ে বাঙালি খাবার খাবেন।
  • মালদ্বীপ এয়ারপোর্ট থেকে মানি এক্সচেঞ্জ না করে ঢাকা থেকে মানি এক্সচেঞ্জ করুন।

আরো পড়ুন