alternatetext
রুপসী ঝর্ণা

রুপসী ঝর্ণা, মিরসরাই

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় ছোট বড় অনেক গুলো ঝর্ণা রয়েছে। যার মধ্যে রুপসী ঝর্ণা অন্যতম। বর্ষা মৌসুমে ঝর্ণায় প্রচুর পানি থাকায় এর আসল রূপ দেখা যায়। বছরের অন্য সময় ঝর্নার পানি কিছুটা কম থাকে।

এই ঝর্ণার প্রকৃতি রূপ যেকোনো মানুষের মন কেড়ে নিবে। ঝর্ণার রূপের কারণে স্থানীয় লোকেরা এই ঝর্ণার নাম দিয়েছে রুপসী ঝর্ণা। আঁকাবাঁকা গ্রামীণ সবুজ মেঠো পথ পার হয়ে উঁচু পাহাড়ের পাদদেশে গেলেই ঝর্ণার পানি গড়িয়ে পড়ার শব্দ শুনতে পাবেন।

ঝর্ণায় যাওয়ার পথে দৃষ্টিনন্দন ছড়া, সবুজ গ্রামীণ প্রকৃতি, দুপাশে দন্ডায়মান উঁচু পাহাড়, গুহার মত ঢালু ছড়া ঝর্ণার সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে তুলেছে।

উঁচু পাহাড় থেকে অবিরাম শীতল পানি গড়িয়ে পড়ছে বছরের পর বছর ধরে। ঝর্ণার শীতল পানি স্পর্শ করলে শীতল পরশ মূহুর্তে আপনার সকল ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। ঝর্ণার পানিতে গোসল করার লোভ আপনি সামলাতে পারবেন না।

BM Khalid Hasan Sujon

ঝর্ণার বাহিরের সৌন্দর্যের চেয়ে ভেতরের সৌন্দর্য  অনের বেশি সুন্দর। ঝর্ণার অপূর্ব প্রকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে প্রত্যেক দিন শতশত পর্যটক এখানে ভিড় জমাচ্ছে।

রুপসী ঝর্ণা যাওয়ার উপযুক্ত সময়

বছরের যেকোনো সময় এই ঝর্ণায় যেতে পারবেন। তবে, বর্ষা মৌসুমে এখানে প্রচুর পানি থাকে। তাই এই সময় গেলে ঝর্ণার আসল সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। এছাড়া অন্য সময় ঝর্ণায় পানির পরিমান কিছুটা কম থাকে।

প্রবেশ ও টিকেট মূল্য

রুপসী ঝর্ণায় প্রবেশ পথে আপনাকে ২০ টাকা দিয়ে টিকেট কাটতে হবে।

BM Khalid Hasan Sujon

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে চড়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের বড়দারোগাহাট বাজারে নামতে হবে। এসি, নন-এসি বাস ভেদে ভাড়া লাগবে ৫০০ টাকা থেকে ১,২০০ টাকা পর্যন্ত।

বড়দারোগাহাট বাজার থেকে সিএনজি বা অটোরিকশা করে বাজারে উত্তর পাশের ব্রিকফিল্ড রোড দিয়ে পাহাড়ের পাদদেশে পর্যন্ত যেতে পারবেন। সিএনজিতে জনপ্রতি ভাড়া লাগবে ২০ টাকা।

এরপর থেকে আপনাকে পায়ে হেঁটে যেতে হবে। ব্রিকফিল্ড রোড দিয়ে আধা কিলোমিটার পথ হেঁটে গেলে রেললাইন। রেললাইন পার হয়ে মেঠো পথ, দুপাশে সবুজ ফসলের মাঠ, দন্ডায়মান পাহাড়।

মেঠোপথ ধরে হাঁটলে পাহাড়ের পাদদেশ, বামদিকে ৫০ গজের মতো হাঁটলে বিশাল ছড়া। এই ছড়া দিয়ে রুপসী ঝর্ণায় যেতে হবে। রুপসীর প্রথম ধাপটা বড় ঝর্ণার মতো, অনেকটা খাড়া তবে ঢালু, পানি বেয়ে পড়ছে। অনেকে মনে করে এটা রুপসী ঝর্ণা কিন্তু না।

BM Khalid Hasan Sujon

এটা ঝর্নার বাহিরের রূপ ভেতরের রূপ অনেক বেশি সুন্দর। ঝর্ণার উপর উঠলে চোখে পড়বে খোলা একটি জায়গা। তারপর বড় একটি পাথর, পাথরের মাঝ দিয়ে অবিরাম শীতল পানি গড়িয়ে পড়ছে।

খাড়া পাথরটি বেয়ে ১০ ফুট উপরে উঠলে অন্যরকম সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। দেখতে পাবেন বিশাল ছড়া, দেখতে আঁকাবাঁকা নদীর মতো বয়ে চলেছে। ছড়ার মধ্যে দিয়ে হেঁটে চললে আপনার মনে হবে কোনো গুহার ভিতর দিয়ে হাঁটছেন। কাঁদা-বালু ছাড়া সমান এক ছড়া। হাঁটার সময় দেখতে পাবেন পাহাড়ি বৃক্ষ, ফল, ফুল ও লতা-পাতা।

ছড়ার মধ্যে দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বড় ছড়া ও ছোট ছড়া দুইটি পথ পাবেন। বড় ছড়া দিয়ে এগিয়ে গেলে রুপসী মূল ঝর্ণায় পৌঁছে যাবেন। ঝর্ণার সৌন্দর্য দেখে যেকেউ মুগ্ধ হবে।

কোথায় খাবেন

ঝর্ণা দেখতে গিয়ে খাবার জন্য বড়দারোগাহাট বাজার, বড়কমলদহ ও কমলদহ বাজারে খাবার জন্য হোটেল রয়েছে। সেখান থেকে সকালে নাস্তা করে ঝর্ণা দেখে ফিরে এসে দুপুরে খাবার খেতে পারবেন।

যারা ভালো মানের খাবার খেতে চান তারা সীতাকুণ্ড উপজেলা শহরে এসে বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট থেকে পছন্দের খাবার খেতে পারবেন। এছাড়া চট্টগ্রাম শহরে গিয়ে আরো ভালো মানের রেস্টুরেন্টে গিয়ে খাবার খেতে পারবেন।

এছাড়া ঝর্ণায় যাওয়ার পথে বেশ কিছু দোকান রয়েছে। যেখান থেকে আপনি সকালের নাস্তা করে দুপুরের খাবার অগ্রিম অর্ডার দিয়ে যেতে পারবেন। এখানে দেশি মুরগি, সোনালী মুরগী, গরুর মাংস, ডাল, ভর্তা সহ সাদা ভাতের বিভিন্ন প্যাকেজ রয়েছে।

এখান থেকে খাবার অর্ডার দেওয়ার সাথে ওয়াশরুম, ব্যাগ সহ গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র তাদের কাছে নিরাপদে রেখে যেতে পারবেন। এজন্য অতিরিক্ত কোনো টাকা পয়সা দেওয়া লাগবে না।

কোথায় থাকবেন

ঝর্ণার আশেপাশে থাকার জন্য কোনো হোটেলের ব্যবস্থা নেই। অধিকাংশ দর্শনীর্থীরা ডে-ট্যুরে গিয়ে আবার ফিরে এসে। যারা বাহিরে থেকে ঘুরতে যাবেন তারা সীতাকুণ্ড উপজেলা শহরে এবং চট্টগ্রাম শহরের গিয়ে থাকার জন্য ৭০০ টাকা থেকে ৪,০০০ টাকা মধ্যে অনেক হোটেল, গেস্ট হাউজ পেয়ে যাবেন।

আরো পড়ুন

Similar Posts