রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড, কক্সবাজার

রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড (Radiant Fish World) বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক মানের একটি ফিস অ্যাকুরিয়াম। কক্সবাজার জেলা শহরের ঝাউতলায় এই ফিস মিউজিয়াম অবস্থিত।

এখানে বঙ্গোপসাগরে থাকা বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ সংরক্ষণ করা হয়েছে, যার মধ্যে অনেকটাই প্রায় বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। সামুদ্রিক বিলুপ্ত বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও প্রাণী সংরক্ষণে এটিকে জাদুঘর করা হচ্ছে।

রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড শুধু পর্যটকদের বিনোদনের জন্য নয়, এখান থেকে আপনি সাগরের জীববৈচিত্র্য মাছ ও প্রাণী সম্পর্কে জানার একটি শিক্ষা কেন্দ্র বলতে পারেন। এখানে প্রতিদিন যোগ সাধু ও লোনা পানির নতুন নতুন বিচিত্র প্রজাতির মাছ।

যারা সমুদ্রের তলদেশের বৈচিত্র্যময় পরিবেশ উপভোগ করতে চান তাদের এই এই ফিস অ্যাকুরিয়াম অন্যতম একটি পর্যটন স্থান। এটা ঘুরে দেখতে আপনার প্রায় ২ ঘন্টা সময় লাগবে।

BM Khalid Hasan Sujon

এখানে রয়েছে সাগর ও মিঠা পানির প্রায় ১০০ প্রজাতির মাছ, ২০০+ প্রজাতির সামুদ্রিক প্রাণী। বিরল প্রজাতির মাছ সহ এখানে আরো দেখতে পাবেন শাপলাপাতা, পানপাতা, জেলিফিস, আউস, পিরানহা, হাঙ্গর, পিতম্বরী, বোল, সাগর কুঁচিয়া, কাছিম, পাঙ্গাস, সামুদ্রিক শৈল, চেওয়া সহ আরো বিভিন্ন প্রজাতির মাছ জলজ প্রাণী।

ফিস অ্যাকুরিয়ামে প্রবেশ করার পর আপনি অনুভব করবেন সাগরের তলদেশে আছেন। চারিদিকে নানা প্রজাতির মাছ ও সামুদ্রিক প্রাণী ঘুরে বেড়াচ্ছে। যারা কক্সবাজার ভ্রমণ করতে যাবেন তারা অবশ্যই রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড দেখার সুযোগ হাতছাড়া করবেন না।

রেডিয়েন্ট ফিশ অ্যাকুরিয়াম কমপ্লেক্সকে মোট ৮টি জোনে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশি বিদেশি নানা প্রজাতির পাখি, ছবি তোলার জন্য আকর্ষণীয় ডিজিটাল কালার ল্যাব, থ্রীডি মুভি দেখার নান্দনিক স্পেস, কেনাকাটা করার জন্য দোকান, প্রার্থনা কক্ষ, লাইভ ফিস রেস্টুরেন্ট, বাচ্চাদের খেলার জোন, বিয়ের পার্টির কনফারেন্স হল, ছাড়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করার পাশাপাশি বারবিকিউ খেতে পারবেন।

এছাড়া গাড়ি পাকিং করার সুবিধা, লাগেজ রাখার জন্য লকার ব্যবস্থা আছে। এখানে এসে সাগর তলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে করতে কখন যে আপনার ৩-৪ ঘন্টা সময় পার হয়ে যাবে বুঝতে পারবেন না।

BM Khalid Hasan Sujon

মালেশিয়ার টেকনিক্যাল প্রকৌশলিদের সহায়তায় রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড নির্মত করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের এই অ্যাকুরিয়াম নির্মানে সময় লাগছে ২ বছর। 

১০০ কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মিত এই রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ডে আছে ওয়াটার ফল জোন, রিভার স্ট্রিম ভিউ, ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট, স্বাদু পানির মাছ, লোনা পানির মাছ, সী সাইট জঙ্গল ভিউ, ঈল গ্যালারি, পরিচ্ছন্নকর্মী সাকার ফিস, ডলফিন সেলফি জোন, শার্ক গ্যালারী ফটোসেশন, ডিপ ওশ্যান টানেল, ডিপ ওশ্যান ক্যাইড, রেডিয়েন্ট ঝর্ণা, কোরাল রিফভিউ সিঁড়ি, অক্টোপাস ওয়ার্ল্ড, ইউনির্ভাস অব ক্যার্ব, স্নোইল জোন, ফরেইন ফিস জোন, কিলার শার্ক, শ্রীস্প জোন, কফি শপ, এ্যাকুরিয়াম গবেষণাগার, বাগদা চিংড়ির জীবনচক্র, থ্রীডি মুভি হাউস, এডুকেশনাল কনফারেন্স হল, ফিস মিউজিয়াম, কিউট জেলি ফিস, ফটোগ্রাফিক কালার ল্যাব, স্যুভেনির শপ, কাটের সিঁড়ি, নাইট ডি ভিআরএফ, কিডস প্লেয়িং এন্ড গেইমিং জোন, কোরাল কনফারেন্স হল, রুপচাঁদা কনফারেন্স হল, রুফ টপ গার্ডেনিং, রুফ টপ বার-বি কিউ

কিভাবে রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড যাবেন

রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড দেখতে যাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে যেতে হবে কক্সবাজার। বাংলাদেশ বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কক্সবাজার যেতে পারবেন। কক্সবাজার শহরের যেকোনো স্থানে খু্ব সহজে সিএনজি/ইজিবাইক/অটোরিকশা পেয়ে যাবেন।

BM Khalid Hasan Sujon

কক্সবাজার কলাতলী বিচের সড়কে আপনি সব ধরনের যানবাহন পাবেন। এখান থেকে সিএনজি/ইজিবাইক/অটোরিকশা করে যেতে হবে ঝাউতলা, প্রধান সড়ক, কক্সবাজার।

কলাতলী বিচ থেকে লোকাল ইজিবাইকে ১৫-২০ টাকা দিয়ে চলে যেতে পারবেন ঝাউতলা। ইজিবাইক রিজার্ভ ভাড়া করলে ৬০-৭০ টাকার মধ্যে যেতে পারবেন।

ঝাউতলা পৌষী রেস্টুরেন্ট এর সামনের মোড় থেকে বামপাশ দিয়ে একটু হেঁটে গেলে পেয়ে যাবেন রেডিয়েন্ট ফিশ ওয়ার্ল্ড। সপ্তাহে ৭ দিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯:৩০ মিনিট পর্যন্ত পর্যটকদের জন্য অ্যাকুরিয়াম খোলা থাকে।

রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড টিকিট মূল্য (Radiant fish world ticket price)

রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ডে প্রবেশ করার জন্য রেগুলার টিকিট মূল্য ৩০০ টাকা। শুধুমাত্র অনলাইনে টিকিট বুকিং এ পাবেন ৫০ টাকা ছাড়। বিকাশ, নগদ এবং রকেট এর মাধ্যমে অনলাইন পেমেন্ট করতে পারবেন।  বাচ্চাদের জন্য সূলভ মূল্যে টিকেটের ব্যবস্থা আছে।

যোগাযোগ করুন

  • ২৯ ঝাউতলা প্রধান সড়ক, কক্সবাজার বাংলাদেশ
  • ঢাকা অফিস: ২৩/ডি/১, বক্স কালভার্ট, কাঠাল বাগান, পাস্থপথ ঢাকা-১২০৫
  • মোবাইল: ০১৮৫৭-৭৮৯২৩৪, ০১৯৭৬-১৮৯২৩৪
  • ইমেইল: radiantfishworldrfw@gmail.com
  • ওয়েবসাইট

কোথায় থাকবেন

কক্সবাজার পর্যটকদের থাকার জন্য ৫০০+ হোটেল ও রিসোর্ট গড়ে উঠেছে। এই হোটেল ও রিসোর্ট গুলোর মধ্যে থেকে আপনার বাজেট অনুযায়ী হোটেল ও রিসোর্ট গুলোতে থাকতে পারবেন।

এর মধ্যে সায়মন বিচ রিসোর্ট, কক্স টুডে, সী প্যালেস, সী গাল, নিটোল রিসোর্ট, বীচ ভিউ, ইউনি রিসোর্ট, কোরাল রীফ, ইকরা বিচ রিসোর্ট, মিডিয়া ইন, নীলিমা রিসোর্ট, কল্লোল, হানিমুন রিসোর্ট, উর্মি গেস্ট হাউজ, লং বীচ, মারমেইড বিচ রিসোর্ট, আইল্যান্ডিয়া, ইকরা বিচ রিসোর্ট, অভিসার উল্লেখযোগ্য।

কম খরচে থাকার জন্য কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত এবং মেইল রোড থেকে যত দূরে হোটেল ভাড়া নিবেন তত কম টাকায় হোটেল পাবেন। সিজনের সময় কক্সবাজার হোটেল অগ্রিম বুকিং করে যাওয়া ভালো। অফ সিজনে সব সময় হোটেল রুম পেয়ে যাবেন। সিজনের সময়ের তুলনায় অফ সিজনে হোটেল ও রিসোর্ট ভাড়া কম বেশি হয়ে থাকে। কক্সবাজার সরকারি হোটেল৫০০ টাকায় কক্সবাজার হোটেল তথ্য জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন।

কোথায় খাবেন

রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ডে ঘুরতে গিয়ে খাওয়া জন্য সেখানে রেস্টুরেন্ট পাবেন। সেখান থেকে হালকা খাওয়া-দাওয়া করে নিতে পারেন। কক্সবাজার নানা মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। আপনার পছন্দতম রেস্টুরেন্ট থেকে থেকে খেতে পারবেন।

কক্সবাজার শহর পর্যটন শহর তাই প্রত্যেক জায়গায় বিভিন্ন মানের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এর মধ্যে ধানসিঁড়ি, পৌষী, ঝাউবন, নিরিবিলি, রোদেলা উল্লেখযোগ্য। খাওয়ার আগে অবশ্যই খাবারের দাম জেনে নিবেন।

এই রেস্টুরেন্ট গুলোতে ভাত, মাছ, খাঁশি, গরু, দেশি মুরগি, হাঁস, কবুতর সহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ এবং মাছের কয়েক প্রকার ভর্তা পাবেন। তাছাড়া নিজের পছন্দ মতো মাছ কিনে নিয়ে বারবিকিউ বানিয়ে খেতে পারবেন।