আজকের ভ্রমণ টিপস এ আমরা জানবো টেকনাফ উপজেলার লোক শান্ত, নিরিবিলি শামলাপুর সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে। আপনারা যারা একটু প্রশান্তিমূলক, লোকালয়মুক্ত, নিরিবিলি শান্ত প্রকৃতি প্রেমি তাদের জন্য শামলাপুর সমুদ্র সৈকত উপযুক্ত স্থান।
আমরা সবাই সমুদ্র সৈকত বলতে কক্সবাজারকে চিনি। এর পাশাপাশি লাবনি পয়েন্ট, সুগন্ধা, কোলাটোলি সমুদ্র সৈকত রয়েছে যেখানে অধিকাংশ মানুষ সময় কাটাতে যায়।
আজকের আর্টিকেলে আমরা টেকনাফের এমন একটি সমুদ্র সৈকত সম্পর্কে জানবো যেখানে আপনারা নিরিবিলি শান্ত প্রকৃতিক পরিবেশে সময় কাটাতে পারবেন।
শামলাপুর সমুদ্র সৈকত | Shamlapur sea beach
শামলাপুর সমুদ্র সৈকত টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নে অবস্থিত। এখানে সবুজ ঝাউবন, জেলেদের মাছ ধরার নৌকা এবং জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য ছাড়া আর তেমন কিছুই দেখতে পাবেন না।
এই সমুদ্র সৈকতে তেমন কোনো মানুষের দেখা পাবেন না। আপনারা যারা নিরিবিলি প্রাকৃতিক ভ্রমণ প্রেমিক তাদের জন্য এই সমুদ্র সৈকত উপযুক্ত জায়গা। অনেকের কাছে শামলাপুর সমুদ্র সৈকতটি বাহারছড়া সমুদ্র সৈকত নামে পরিচিত।
এখানে কক্সবাজার, ইনানি অথবা সেন্টমার্টিনের মত পর্যাটক না থাকলেও নীল জলরাশি, সূর্যস্থ, জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য, স্থানীয় মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবন আপনার নাগরিক জীবনের অস্থিরতা ভুলিয়ে দিবে।
আপনি যখন সমুদ্র সৈকতে হাঁটবেন তখন বিভিন্ন প্রজাতির কাঁকড়া, ঝিনুক, কচ্ছম, মাছ ইত্যাদি দেখতে পাবেন। নিরিবিলি সৈকত হওয়াতে সমুদ্রের প্রাণীরা নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে চারিদিকে ঘোড়াঘোরি করতে পারে।
সমুদ্রের প্রবল বাতাস, ঢেউয়ের গর্জন চারিদিকের পরিবেশকে বদলে দিয়ে সূর্যস্থের সোনালী আলোয় পুরো সমুদ্র সৈকতের জলরাশি ভিন্ন একটি চিত্র আপনার চোখের সামনে দেখতে পাবেন।
কিভাবে শামলাপুর সমুদ্র সৈকতে যাবেন?
শামলাপুর সমুদ্র সৈকতে যেতে হলে প্রথমে টেকনাফ উপজেলায় যেতে হবে। ঢাকা থেকে সরাসরি এসি, নন-এসি বাস টেকনাফ চলাচল করে। তাছাড়া ঢাকা বা দেশের স্থান থেকে কক্সবাজার এসে মেরিন ড্রাইভ সড়ক পথে ২ ঘন্টার দূরত্বে শামলাপুর সমুদ্র সৈকত বা বাহারছড়া সমুদ্র সৈকত।
টেকনাফ উপজেলার সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরত্বে বাহারছড়া ইউনিয়নে শামলাপুর সমুদ্র সৈকত অবস্থিত। টেকনাফ থেকে হোয়াইক্যং রোড ধরে শামলাপুর যেতে পারবেন।
টেকনাফের বাস থেকে হোয়াইক্যং রোডে নেমে ধমধমিয়া হয়ে ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা বা সিএনজি করে শামলাপুর সমুদ্র সৈকতে যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন?
শামলাপুর সমুদ্র সৈকত এলাকায় থাকার জন্য কোনো হোটেল বা রিসোর্টের ব্যবস্থা নেই। তাই পর্যাটকদের টেকনাফের মাঝারি হোটেল গুলোতে থাকতে হবে অথবা কক্সবাজারের হোটেল গুলোতে থাকতে হবে। অধিকাংশ পর্যাটকরা কক্সবাজারের হোটেল গুলোতে রাত্রিযাপন করে।
কক্সবাজারে পর্যাটকদের জন্য বিভিন্ন দামের প্রায় ৫০০ টির বেশি হোটেল, রির্সোট ও মোটেল রয়েছে। আপনারা নিজের পছন্দমত বাজেটের হোটেল গুলোতে দরদাম করে থাকতে পারবেন।
ভ্রমণের সিজন ও ছুটির দিন ব্যাতিত কক্সবাজার হোটেল, রিসোর্ট গুলো কম প্রাইজে থাকতে পারবেন। সিজনের সময় কক্সবাজারের অধিকাংশ হোটেল গুলো বুক থাকে, তাই আগে থেকে বুকিং করে যাওয়া ভালো।
কোথায় খাবেন?
টেকনাফে পর্যাটকদের খাবার জন্য মাঝারি মানের বেশ কিছু রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এই রেস্টুরেন্ট গুলো থেকে আপনাদের পছন্দসই খাবার খেতে পারবেন।
অধিকাংশ পর্যাটকেরা কক্সবাজার থাকে, তাই এখানে প্রায় সব ধরনের রেস্টুরেন্ট রয়েছে। মাঝারি মানের রেস্টুরেন্ট গুলোর মধ্যে ঝাউবন, নিরিবিলি, পৌষি, ধানসিঁড়ি, রোদেলা, আর বোগদাদিয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
সিজনের সময় অনুযায়ী সব কিছুর মতো রেস্টুরেন্ট গুলোতে খাবারের দামও কম বেশি হতে পারে। আমার কাছে সবচেয়ে আকর্ষনীয় লেগেছে লাবনী পয়েন্ট সংলগ্ন হান্ডি রেস্তোরাঁতে ২৫০ টাকার হায়দ্রাবাদী বিরানি। আপনারাও খেয়ে দেখতে পাবেন।
এছাড়া যেসকল পর্যাটকেরা আরো উন্নত বিলাসী খাবার খেতে চাচ্ছেন তাদের জন্য কেওএফসি (KFC) তো রয়েছে।