সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ ২০২৫

সাজেক ভ্যালি (Sajek Valley) বর্তমান বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ স্থান। চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তর্গত বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ইউনিয়ন। যা সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১৮০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। আজকের ভ্রমণ টিপসে সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ সহ বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করবো। যাতে আপনি খুব সহজে সাজেক ভ্রমণ করতে পারেন।

পর্যটকদের মধ্যে অনেকেই সাজেক ভ্যালিকে বাংলার ভূস্বর্গের সাথে তুলনা করেন। চারিদিক নদীর ঢেউয়ের মতো সবুজ পাহাড়ের সারি, তুলার মতো সাদা মেঘ, এর মধ্যে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে সাজেক। সকাল বিকাল প্রতিটা মূহুর্তে এখানকার পরিবেশের আলাদা আলাদা সৌন্দর্য দেখতে পাবেন।

সাজেক ভ্যালির অবস্থান রাঙ্গামাটি জেলার হলেও খাগড়াছড়ি থেকে যাতায়াত অনেক সহজ। খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে সাজেকের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার এবং দীঘিনালা থেকে সাজেকের দূরত্ব ৪০ কিলোমিটার।

সাজেক কি কি দেখবেন

চারিদিকে পাহাড়ের সারি, তুলার মতো সাদা মেঘ যেকোনো প্রকৃতি প্রেমীদের মুগ্ধ করবে। এটা এমন এক প্রকৃতি যেখানে একদিনে তিন রকম রূপের স্বাদ নিতে পারবেন। কখনো গরম, কখনো হঠাৎ বৃষ্টি আবার কখনো ঘন কুয়াশার মতো মেঘে ছেয়ে যাবে চারপাশ। যারা পাহাড় আর মেঘের খেলা দেখতে চান তাদের জন্য সাজেক ভ্যালি আদর্শ স্থান।

সাজেকে আসা পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণ হল কংলাক পাহাড়। এছাড়া রয়েছে লুসাই ভিলেজ, রুইলুই পাড়া, হ্যালিপ্যাড ও রক গার্ডেন। কংলাক পাহাড় সাজেকের সবচেয়ে উচ্চতম স্থান। যেখান থেকে পুরো সাজেক ভ্যালি ও কর্ণফুলী নদীর উৎপত্তিস্থল ভারতের লুসাই পাহাড় দেখতে পারবেন।

কংলাক পাহাড়ের চূড়ায় উঠতে আপনাকে ৪০ মিনিটের পথ ট্রেকিং করতে হবে। এখানে যাওয়ার উপযুক্ত সময় বিকাল বেলা। কংলাক পাহাড়ের চূড়ায় দাঁড়িয়ে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে পারবেন। ভাগ্য ভালো থাকলে রংধনুর দেখা পাবেন।

সাজেকে একটি ঝর্ণা রয়েছে যার নাম কমলক ঝর্ণা। রুইলুই পাড়া থেকে এই কমলক ঝর্ণায় যেতে ২ ঘন্টার পথ ট্রেকিং করতে হবে। এই ঝর্ণাটি স্থানীয় অনেকের কাছে পিদাম তৈসা ঝর্ণা বা সিকাম তৈসা ঝর্ণা নামে পরিচিত।

BM Khalid Hasan Sujon

সূর্যাস্তের পর সাজেকের আকাশে নক্ষত্রের মেলা দেখতে পাবেন। জোছনা রাতে এখানকার প্রকৃতি আকর্ষণীয় হয়ে উঠে। রাতের আকাশের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে হ্যালিপ্যাড আদর্শ স্থান।

সাজেকে মেঘ দেখার আদর্শ সময় ভোরবেলা। ভোর ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ফ্রেশ মেঘের খেলা দেখতে পাবেন। চাইলে হাত দিয়ে মেঘ ছুয়ে দেখতে পারবেন। মেঘের গায়ে ভোরের আলো পড়তে অন্যরকম এক সৌন্দর্যের সৃষ্টি হয়। সকালের সূর্যোদয় দেখতে চাইলে হ্যালিপ্যাড আদর্শ স্থান। ভোরে এখানকার প্রকৃতি প্রতি ১০ মিনিটে একবার রূপ পরিবর্তন করে। 

তাই আমার পরামর্শ সাজেক ভ্যালি ভ্রমণে গিয়ে সারারাত জেগে ভোরের এই প্রকৃতি কোনো ভাবেই মিস করা যাবে না। এছাড়া ঘুরে দেখতে পারেন এখানকার আদিবাসীদের জীবন যাপন। সাজেক থেকে ফেরার পথে হাজাছড়া ঝর্ণা, দীঘিনালা ঝুলন্ত সেতু ও দীঘিনালা বনবিহার দেখে আসতে পারেন।

সাজেক যাওয়ার উপযুক্ত সময়

সাজেক ভ্যালি বছরের একেক সময় একেক রূপ ধারণ করে। শীতে এক রকম তো বর্ষায় এক রকম। তাই বছরের যেকোনো সময় সাজেক ভ্যালি ভ্রমণে যাওয়া যায়। তবে বর্ষার শুরে থেকে শীতের শেষ পর্যন্ত মে মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত সাজেক যাওয়ার উপযুক্ত সময়। কারণ এসময় প্রকৃতি সতেজ থাকে এবং সাদা মেঘের খেলা দেখা যায়। চাইলে হাত দিয়ে মেঘ স্পর্শ করতে পারবেন।

BM Khalid Hasan Sujon

সাজেক ভ্যালি যাওয়ার উপায়

সাজেকের অবস্থান রাঙ্গামাটি জেলার হলেও খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা থেকে যাতায়াত করা সহজ। তাই সাজেক ভ্যালি আসতে হলে প্রথমে আপনাকে খাগড়াছড়ি আসতে হবে।

ঢাকার গাবতলী, কলাবাগান সহ বিভিন্ন স্থান থেকে খাগড়াছড়িগামী দেশ ট্রাভেলস, শান্তি পরিবহন, হানিফ এন্টারপ্রাইজ, সৌদিয়া পরিবহন, ইম্পেরিয়াল এক্সপ্রেস, শ্যামলী পরিবহন, এস আলম, ঈগল পরিবহন ইকোনো সার্ভিস ইত্যাদি বাসে খাগড়াছড়ি আসতে পারবেন। নন-এসি/এসি বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৭৫০ থেকে ১,৭৫০ টাকা পর্যন্ত।

যারা ঢাকা থেকে সরাসরি খাগড়াছড়ির দীঘিনালা পর্যন্ত যেতে চান তারা ঢাকার গাবতলী ও কলাবাগান বাস কাউন্টার থেকে শান্তি পরিবহন বাসে চড়ে দীঘিনালা পর্যন্ত যেতে পারবেন। জনপ্রতি ভাড়া লাগবে ৭৫০ টাকা। সাধারণত ঢাকা টু খাগড়াছড়ি বাস গুলো রাত ১০ টায় ছাড়ে। ছুটির দিনে এই রুটে অনেক চাপ থাকে, তাই আগেই টিকেট বুকিং করে রাখবেন।

খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক ভ্যালির দূরত্ব মাত্র ৭০ কিলোমিটার। খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর থেকে জীপগাড়ি (চাঁদের গাড়ি) রিজার্ভ করে সাজেক ঘুরে আসতে পারেন। ২ দিনের জন্য সাজেক যাওয়া-আসা ভাড়া লাগবে ১০,৫০০ থেকে ১২,৫০০ টাকা পর্যন্ত। একটি চাঁদের গাড়িতে ১২ থেকে ১৪ জন যেতে পারবেন। যেতে সময় লাগবে ২-৩ ঘন্টা।

আপনি যদি একা হয়ে থাকেন তাহলে খাগড়াছড়ি থেকে কোনো গ্রুপের সাথে কথা বলে তাদের সাথে যেতে পারবেন। জীপগাড়ি মালিক সমিতিকে বললে তারা আপনাকে যেকোনো একটি গ্রুপের সাথে যুক্ত করে দিবে।

তাছাড়া বাজেটে যদি সম্ভব হয় তাহলে রিজার্ভ সিএনজি ভাড়া নিয়ে সাজেক যেতে পারবেন। সিএনজি ভাড়া লাগবে ৪,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা। পাহাড়ি রাস্তায় সিএনজিতে না যাওয়ার পরামর্শ রইল।

খাগড়াছড়ি জীপগাড়ি মালিক সমিতি খাগড়াছড়ি টু সাজেক যাওয়ার জন্য ভাড়ার তালিকা নিচে উল্লেখ করা হয়েছে।

স্থানভাড়াযাত্রার তথ্য
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক৭,০০০ টাকাসকালে গিয়ে বিকালে আসা
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক৮,৩০০ টাকাসাজেকে ১ রাত্রি যাপন
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক৯,৭০০ টাকাসাজেক ১ রাত্রি যাপন, আলুটিলা গুহা, রিচাং ঝর্ণা ও ঝুলন্ত সেতু দেখা
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক১০,৫০০ টাকাসাজেক ২ রাত্রি যাপন
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক১২,০০০ টাকাসাজেক ২ রাত্রি যাপন, আলুটিলা গুহা, রিচাং ঝর্ণা ও ঝুলন্ত সেতু দেখা
খাগড়াছড়ি থেকে পানছড়ি, অরণ্য কুঠির ও মায়াবিনী লেক৪,৫০০ টাকাসকালে গিয়ে বিকালে আসা
খাগড়াছড়ি থেকে দেবতা পুকুর, আলুটিলা গুহা, রিচাং ঝর্ণা ও ঝুলন্ত সেতু৫,৫০০ টাকাসকালে গিয়ে বিকালে আসা

সাজেক গিয়ে ১-২ রাত্রিযাপন না করলে সকালে গিয়ে বিকালে ফিরে আসলে গাড়ি চালককে অতিরিক্ত ৫০০ টাকা দিতে হবে। এছাড়া জনপ্রতি ২০ টাকা ও গাড়ি পাকিং করার জন্য ১০০ টাকা পর্যটকদের দিতে হবে।

খাগড়াছড়ি সিএনজি সমিতি কতৃক খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাওয়ার নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা।

স্থানভাড়াযাত্রার তথ্য
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক২,৭০০ টাকাশুধু যেতে পারবেন
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক৪,২০০ টাকাসকালে গিয়ে বিকালে আসা
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক৫,২০০ টাকা১ রাত্রিযাপন থাকা
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক৬,২০০ টাকা১ রাত্রিযাপন,  আলুটিলা গুহা, রিচাং ঝর্ণা ও ঝুলন্ত সেতু
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক৬,২০০ টাকা২ রাত্রিযাপন থাকা
খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক৭,২০০ টাকা২ রাত্রিযাপন, আলুটিলা গুহা, রিচাং ঝর্ণা ও ঝুলন্ত সেতু
খাগড়াছড়ি থেকে আলুটিলা গুহা, রিচাং ঝর্ণা ও ঝুলন্ত সেতু১,৫০০ টাকা১ দিনে দেখে ফিরা আসা

খাগড়াছড়ির দীঘিনালা থেকে সাজেক ভ্যালির দূরত্ব মাত্র ৪৯ কিলোমিটার। তবে আপনাকে দীঘিনালায় সকাল ৯টা ৩০ মিনিটের আগে পৌঁছাতে হবে। সেখান থেকে রাস্তার নিরাপত্তা জন্য সেনাবাহিনীর এসকোর্টে যেতে হবে।

প্রত্যেক দিন দুইবার সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে ও দুপুর ২ টা ৩০ মিনিটে সেনাবাহিনীর এসকোর্টে সাজেক যেতে পারবেন। মিস করলে পরবর্তী সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। দীঘিনালা পৌঁছে হাতে সময় থাকলে হাজাছড়া ঝর্ণা দেখে আসতে পারেন।

দীঘিনালা থেকে পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তা ধরে বাগাহাট, মাচালং বাজার ও রুইলুই পাড়া হয়ে সাজেক যেতে হবে। ২-৩ ঘন্টা সময়ের মধ্যে সাকেজ ভ্যালি চলে যাবেন। যেতে যেতে আঁকাবাঁকা উঁচু নিচু পাহাড়ি রাস্তা ও দুপাশের সবুজ প্রকৃতি আপনার সকল ক্লান্তি নিমিষেই দুর করে দিবে।

রাঙ্গামাটি থেকে সাজেক

রাঙ্গামাটি থেকে সড়ক ও নৌপথে বাঘাছড়ি যাওয়া যায়। রাঙ্গামাটি বাস স্টেশন থেকে প্রতিদিন সকাল ৭:৩০ থেকে ৮:৩০ মিনিটে বাস ছেড়ে যায়। জনপ্রতি ভাড়া ২০০ টাকা, যেতে সময় লাগে ৬-৭ ঘন্টা। এছাড়া ঢাকা ও চট্টগ্রাম থেকে বাসে সরাসরি বাঘাছড়ি আসতে পারবেন।

রাঙ্গামাটির রিজার্ভ বাজার লঞ্চঘাট থেকে প্রতিদিন সকাল ৭:৩০ থেকে ৮:৩০ মিনিটের মধ্যে লঞ্চ ছেড়ে যায়। জনপ্রতি ভাড়া ২০০০ টাকা, যেতে সময় লাগে ৬-৭ টাকা। বাঘাছড়ি থেকে জীপগাড়ি (চাঁদের গাড়ি)/সিএনজি/মোটরসাইকেল করে সাজেক ভ্যালি যেতে পারবেন।

চট্টগ্রাম থেকে সাজেক যাওয়ার উপায়

চট্টগ্রাম শহরের কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে বিআরটিসি (BRTC) বাস প্রতিদিন ৪ টি করে বাস চলাচল করে। জনপ্রতি ভাড়া ২০০ টাকা। এছাড়া চট্টগ্রামের অক্সিজেন মোড থেকে ১ ঘন্টা পরপর শান্তি পরিবহনের বাস চলাচল করে। জনপ্রতি ভাড়া ১৯০ টাকা। এই বাসে চট্টগ্রাম থেকে খাগড়াছড়ি সদর শহর বা দীঘিনালা পর্যন্ত যেতে পারবেন।

কক্সবাজার থেকে সাজেক

কক্সবাজার থেকে খাগড়াছড়ি রুটে শান্তি পরিবহনের বাস চলাচল করে। প্রতিদিন কক্সবাজার থেকে রাত ৯ থেকে ১০ টার সময় খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে শান্তি পরিবহন নন-এসি বাস ছেড়ে যায়। জনপ্রতি ভাড়া ৬০০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

সাজেক ভ্যালিতে পর্যটকদের থাকার জন্য ১৩৮ টি রিসোর্ট, কটেজ ও হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে কিছু রিসোর্ট সাম্প্রতিক আগুনে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। সাজেক থাকার জন্য বিভিন্ন মানের রিসোর্ট রয়েছে। প্রতিরাত থাকার জন্য ভাড়া লাগবে ১,৫০০ থেকে ২,৫০০ টাকা।

বিশেষ করে ছুটির দিন গুলোতে রিসোর্ট ও কটেজ ফাঁকা থাকে না। তাই অগ্রিম বুকিং দিয়ে আসবেন। এছাড়া ছুটির দিন গুলোতে ভাড়ার পরিমান একটু বেশি থাকে। রিসোর্ট বুকিং করার আগে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিবেন।

সাজেক ভ্যালি রিসোর্ট ও কটেজ মূল্য তালিকা

জুমঘর ইকো রিসোর্ট: এখানে থাকার জন্য পৃথক ৬ টি কাপল রুম রয়েছে। প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ৪ জন থাকতে পারবেন। কটেজ ভাড়া ৪,০০০ টাকা। যোগাযোগ 01884-208060.

মেঘপুঞ্জি রিসোর্ট: সাজেকের সবচেয়ে সুন্দর ও আকর্ষণীয় রিসোর্ট এটি। এখানে মোট ৪ টি কটেজ রয়েছে। প্রত্যেক কটেজে সর্বোচ্চ ৪ জন পর্যন্ত থাকতে পারবেন। কটেজ ভাড়া ৪,০০০ থেকে ৪,৫০০ টাকা। যোগাযোগ 01815-761065, ফেসবুক পেজ

সাজেক রিসোর্ট: সেনাবাহিনী কতৃক পরিচিত নন-এসি রিসোর্ট। সেনাবাহিনী ও সরকারি প্রথম শ্রেণীয় কর্মকর্তাদের থাকার জন্য বিশেষ ডিসকাউন্ট রয়েছে। ভাড়া ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ টাকা। সাথে খাবার ব্যবস্থা রয়েছে। যোগাযোগ 01847-070395, 01769-302370, 01859-025694.

মেঘ মাচাং: কম খরচে সুন্দর ভিউ দেখতে আকর্ষণীয় একটি রিসোর্ট। থাকার সাথে খাবার সুবিধা পাবেন। এখানে মোট ৫ টি কটেজ রয়েছে। ভাড়া ৩,৫০০ থেকে ৪,৫০০ টাকা। যোগাযোগ 01822-168877.

রুন্ময় রিসোর্ট: এই রিসোর্ট মোট ৫ টি রুম রয়েছে। প্রতি রুমে সর্বোচ্চ ২ জন করে থাকতে পারবেন। নিচ তলা ও উপর তলা ভাড়া ৪,৪৫০ থেকে ৪,৯৫০ টাকা। ৬০০ টাকা দিয়ে অতিরিক্ত বেড নিতে পারবেন। যোগাযোগ 01865-547688.

আলো রিসোর্ট: সাজেকের রুইলুই পাড়ায় অবস্থিত এই রিসোর্ট। এখানে মোট ৬ টি রুম রয়েছে। ভাড়া ১,০০০ থেকে ১,৫০০ টাকা। যোগাযোগ 01841-000645.

সাম্পারি রিসোর্ট: তরুণ-তরুণীদের খোলামেলা পরিবেশে থাকার জন্য আদর্শ রিসোর্ট। এখানে হানিমুন, কাপল, ফ্যামেলি ও গ্রুপ নিয়ে থাকার জন্য বিভিন্ন রুম রয়েছে। ভাড়া ২,৫০০ থেকে ৪,০০০ টাকা। যোগাযোগ 01835-538083।

ছায়ানীড় ইকো রিসোর্ট: রুইলুই পাড়া ক্লাবের পিছনে অবস্থিত এই রিসোর্ট। এখানে স্ট্যান্ডার্ড ও প্রিমিয়াম দুই ধরণের তিনটি রুম রয়েছে। ভাড়া ৩,০০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। যোগাযোগ 01881-164864, ফেসবুক পেজ

মেঘাদ্রি ইকো রিসোর্ট: এই রিসোর্টে ৬ টি কাপল রুম ও ২ বেডের রুম রয়েছে। প্রসস্থ বারান্দা থেকে পাহাড়, আকাশ, মেঘ দেখতে পাবেন। ভাড়া ৩,০০০ থেকে ৪,০০০ টাকা। যোগাযোগ 01883-697728, ফেসবুক পেজ

আদিবাসী ঘর: যাদের বাজেট কম তারা স্থানীয় আদিবাসীদের ঘরে রাত্রিযাপন করতে পারেন। ১৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে থাকতে পারবেন। বন্ধু-বান্ধব নিয়ে থাকার জন্য নিরাপদ কিন্তু কাপল ও ফ্যামেলি নিয়ে না থাকার পরামর্শ রইল।

সাজেকের সকল রিসোর্ট ও কটেজ গুলোর নাম, ঠিকানা, যোগাযোগ তথ্য ও ভাড়া সহ বিস্তারিত তথ্য জানতে এই সাজেক রিসোর্ট লিস্ট আর্টিকেলটি পড়ুন।

সাম্প্রতিক সাজেক ভ্যালির কিছু রিসোর্ট আগুনে পুড়ে যাওয়ার জন্য “ভ্রমণ টিপস” এর পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করছি।

খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা ও খরচ

সাজেকের অধিকাংশ রিসোর্ট ও কটেজ গুলোতে থাকার পাশাপাশি খাবার ব্যবস্থা রয়েছে। খাবার কথা আগেই বলে রাখলে তারা আপনার জন্য পছন্দের খাবার রান্না করে রাখবে।

রিসোর্টে খাবার জন্য জনপ্রতি ১৫০ থেকে ২৫০ টাকা পর্যন্ত খরচ হবে। খাবার মেন্যুতে পাবেন সাদা ভাত, মাছ, মুরগীর মাংস, সবজি, ডাল, সালাত ইত্যাদি। চাইলে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বারবিকিউ খেতে পারবেন। এছাড়া স্পেশাল ব্যাম্বো চিকেন খেতে পারবেন।

এছাড়া যারা বাহিরে খেতে চান তারা ফুডানকি, কাশবন, মনটানা, চিম্বাল ও মারুতি দিদির রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার খেতে পারবেন। এখানে প্রতিবেলা খাবা খরচ লাগবে প্রায় ২০০ টাকা। খাবার মেন্যু সাদা ভাত, ডাল, মুরগী মাংস, সবজি, সালাত ইত্যাদি।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ খরচ

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণের সকল তথ্য ও খরচ আজকের ভ্রমণ টিপসে উল্লেখ করা হয়েছে। বাংলাদেশের অন্যান্য ট্যুরিস্ট স্পটের তুলনায় সাজেক ভ্রমণের খরচ কিছুটা বেশি, আনুমানিক ৬,০০০ থেকে ৮,০০০ টাকা।

আমার পরামর্শ হল কোনো ট্রাভেল গ্রুপের সাথে ভ্রমণ করলে খরচ কিছু কম হবে। এছাড়া বন্ধ-বান্ধব মিলে গ্রুপ করে ট্যুর করলে খরচ অনেক কমে যায়।

সাজেক ভ্যালি ভ্রমণ টিপস

  • ছুটির দিনে সাজেক ভ্রমণে যেতে চাইলে আগেই রিসোর্ট বুকিং করুন।
  • সাজেকের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ নেই তাই সাথে পাওয়ার ব্যাংক নিতে পারেন।
  • সাজেক রবি ও এয়ারটেল সিমের নেটওয়ার্ক ভালো পায়।
  • নিরাপত্তার জন্য সেনাবাহিনীর ক্যাম্পে তথ্য প্রদান করতে হয় তাই জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি সাথে রাখুন।
  • সাজেক যাওয়ার পাহাড়ি আঁকাবাঁকা পথে জীপগাড়ির ছাদের উপর বসা ঝুঁকিপূর্ণ।
  • আদিবাসীদের অনুমতি না দিয়ে ছবি তুলবেন না।
  • স্থানীয় আদিবাসীদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন।
  • যেখানে-সেখানে ময়লা আবর্জনা ফেলবেন না।
  • কম খরচে সাজেক ভ্রমণ করতে গ্রুপ করে ট্যুর করুন।
  • সাজেক যেতে গাইডের প্রয়োজন নেই।

প্রশ্ন উত্তর (FAQ)

খাগড়াছড়ি টু সাজেক চান্দের গাড়ি ভাড়া ২০২৫?

খাগড়াছড়ি টু সাজেক চান্দের গাড়ি ভাড়া নির্ভর করে আপনি কত দিন সাজেক অবস্থান করবেন সেটার উপর। সাধারণত খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক চান্দের গাড়ি ভাড়া ৭,০০০ থেকে ১২,০০০ টাকা পর্যন্ত।

সাজেক ভ্যালির উচ্চতা কত ফুট?

সাজেক ভ্যালির কংলাক পাহাড়ের উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ট থেকে ১৮০০ ফুট।

সাজেক যাওয়ার সহজ উপায় কোনটি?

সাজেক রাঙ্গামাটি জেলায় অবস্থিত হলেও খাগড়াছড়ি থেকে সাজেক যাতায়াত করার পথ সহজ। খাগড়াছড়ি জেলা শহর থেকে সাজেকের দূরত্ব মাত্র ৭০ কিলোমিটার।

আরো পড়ুন