alternatetext
সুপ্তধারা জলপ্রপাত

সুপ্তধারা জলপ্রপাত ভ্রমণ গাইড ও খরচ

পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড উপজেলার চন্দ্রনাথ রিজার্ভ ফরেস্ট ব্লকের চিরসবুজ বনাঞ্চল সমৃদ্ধ সীতাকুণ্ড ইকোপার্কের মধ্যে সুপ্তধারা জলপ্রপাত বা সুপ্তধারা ঝর্ণা অবস্থিত। এই জলপ্রপাতের খুব কাছে সহস্রধারা ঝর্ণা নামে আর একটি ঝর্ণা রয়েছে।

শীত ও গ্রীষ্মকালে এই জলপ্রপাতে পানির পরিমান একটু কম হলেও বর্ষাকালে প্রচুর পানি থাকে। বিশাল চিরসবুজ বনভূমি, বন্যপ্রাণী ও ঝর্ণা উপত্যকার অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পর্যটক এখানে ছুটে আসেন।

সুপ্তধারা জলপ্রপাত বা ঝর্ণা যাওয়ার উপযুক্ত সময়

বর্ষা মৌসুমে ঝর্ণায় প্রচুর পানি থাকে এবং চারপাশের পরিবেশ সবুজ থাকে তাই বর্ষা মৌসুমে ঝর্ণায় যাওয়ার উপযুক্ত সময়। এছাড়া বছরের যেকোনো সময় ঝর্ণায় যেতে পারবেন কিন্তু পানির পরিমান কম থাকে।

BM Khalid Hasan Sujon

সুপ্তধারা জলপ্রপাত যাওয়ার উপায়

সুপ্তধারা ঝর্ণা বা জলপ্রপাত চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড  ইকোপার্কে অবস্থিত। ঢাকা থেকে এই জলপ্রপাতে যেতে চাইলে প্রথমে সীতাকুণ্ড যেতে হবে। ঢাকার গাবতলী, সায়েদাবাদ, ফকিরাপুল, আব্দুল্লাহপুর বাস টার্মিনাল থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো বাসে চড়ে সীতাকুণ্ড বাস স্টপেজ থেকে ২ কিলোমিটার দূরে ফকিরহাট নামক জায়গায় নেমে যেতে হবে। এসি, নন-এসি বাস ভেদে ভাড়া ৮০০ থেকে ১,২০০ টাকা।

ঢাকা থেকে সরাসরি সীতাকুণ্ড যাওয়ার কোনো ট্রেন নেই। তাই ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে সূবর্ণ ও সোনারবাংলা এক্সেপ্রেস বাদে চট্টগ্রামগামী যেকোনো আন্তঃনগর ট্রেন ফেনী রেলস্টেশন থামে। সিট ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ২৬৫ থেকে ৯০৯ টাকা। ফেনী রেলস্টেশন নেমে সিএনজি বা অটোরিকশা করে ২৫ টাকা ভাড়া দিয়ে মহিপাল বাস টার্মিনাল যাবেন। সেখান থেকে লোকাল বাসে ৯০ টাকা ভাড়া দিয়ে সীতাকুণ্ড বাজার পার হয়ে ফকিরহাট নেমে যাবেন।

চট্টগ্রাম শহরের মাদারবাড়ী ও কদমতলী বাস টার্মিনাল থেকে সীতাকুণ্ডগামী বাস পেয়ে যাবেন। বাসে চড়ে ফকিরহাট নামক জায়গায় নেমে যাবেন। এছাড়া অলংকার মোড় থেকে ট্রেক্সি করে ফকিরহাট যেতে পারবেন।

সীতাকুণ্ড থেকে সিএনজি ভাড়া নিয়ে সরাসরি ইকোপার্ক যেতে পারবেন। চাইলে সারাদিনের জন্য একটা সিএনজি ভাড়া নিয়ে ইকোপার্ক সহ আশেপাশের দর্শনীয় স্থান সমূহ ঘুরে দেখতে পারবেন। সিএনজি রিজার্ভ ভাড়া লাগবে ১,২০০ থেকে ১,৫০০ টাকা।

BM Khalid Hasan Sujon

প্রবেশ টিকেট মূল্য

সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক প্রবেশ করার জন্য ২০ টাকা দিয়ে টিকেট কাটতে হবে। এছাড়া সিএনজি বা প্রাইভেট কার রাখার জন্য আলাদা চার্জ রয়েছে।

কোথায় খাবেন

সীতাকুণ্ড বাজারে খাবার জন্য মোটামুটি মানের কয়েকটি হোটেল ও রেস্তোরাঁ রয়েছে। এর মধ্যে হোটেল সৌদিয়া, হোটেল আল-আমিন ও আপন রেস্তোরাঁ উল্লেখযোগ্য। এখানে আপনি সাদা ভাত, মাছ, মাংস, সবজি, ডাল, ভর্তা ইত্যাদি খেতে পারবেন। ১৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে প্রতিবেলা পেট ভরেখেতে পারবেন।

ভালো মানের খাবার খেতে চাইলে চট্টগ্রাম শহরের চলে যান। সেখানে ভালো মানের অনেক রেস্টুরেন্ট রয়েছে। সেখান থেকে পছন্দসই খাবার খেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

সীতাকুণ্ড বাজারে থাকার জন্য মোটামুটি মানের কয়েকটি হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হোটেল সাইমুন, রুম ভাড়া ৪০০ থেকে ৭০০০ টাকা। মোবাইল নাম্বার 01827-334082, 01825-128767। হোটেল সৌদিয়া, রুম ভাড়া ৭০০ থেকে ১,২০০ টাকা। মোবাইল নাম্বার 01991-787979, 01816-518119।

BM Khalid Hasan Sujon

এছাড়া সীতাকুণ্ড সরকারি ডাকবাংলো রয়েছে। সেখানে অনুমতি নিয়ে কম খরচে সেখানে থাকতে পারবেন। যারা থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল খুঁজছেন তারা চট্টগ্রাম শহরের চলে যান। সেখানে থাকার জন্য ভালো মানের হোটেল রয়েছে।

সীতাকুণ্ড দর্শনীয় স্থান

সীতাকুণ্ড ও মীরসরাই রেঞ্জে ঝর্ণা ছাড়াও আশেপাশে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। সুপ্তধারা জলপ্রপাত দেখতে গিয়ে হাতে সময় নিয়ে এসব দর্শনীয় স্থান ঘুরে দেখে আসতে পারেন।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো রুপসী ঝর্ণা, সোনাইছড়ি ট্রেইল, খৈয়াছড়া ঝর্ণা, কমলদহ ঝর্ণা, নাপিত্তাছড়া ঝর্ণা, সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক, সহস্রধারা ঝর্ণা ২, চন্দ্রনাথ মন্দির, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত ইত্যাদি।

Similar Posts