alternatetext
বাংলাদেশ থেকে কাশ্মীর ভ্রমণ প্যাকেজ

বাংলাদেশ থেকে কাশ্মীর ভ্রমণ প্যাকেজ ২০২৫

সৌন্দর্যের অপূর্ব লীলাভূমি পৃথিবীর ভূ-স্বর্গ নামে পরিচিত কাশ্মীর। এই সৌন্দর্যের প্রেমে মুগ্ধ হয়ে ভারতের মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীর কাশ্মীরকে পৃথিবীর ভূ-স্বর্গের সাথে তুলনায় করেন। বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসুরা ছুটে যায় কাশ্মীর। আজকের ভ্রমণ টিপসে বাংলাদেশ থেকে কাশ্মীর ভ্রমণ প্যাকেজ বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করবো। যাতে আপনারা স্বল্প খরচে কাশ্মীর ভ্রমণ করতে পারেন।

কাশ্মীর ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তর পশ্চিমের একটি অঞ্চল। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি পর্যন্ত কাশ্মীর ভৌগোলিকভাবে শুধু হিমালয় পর্তবমালা ও পীর পঞ্জল পর্বতমালার উপত্যকাকে নির্দেশ করা হত।

বর্তমানে কাশ্মীর বলতে বোঝায় একটি বিরাট অঞ্চল যা ভারতীয় কেন্দশাসিত জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ অঞ্চল, পাকিস্তান শাসিত গিলগিত-বালতিস্তান ও আজাদ কাশ্মীর প্রদেশ এবং চীন শাসিত আকসাই চীন ও ট্রান্স-কারাকোরাম ট্রাক্ট অঞ্চল।

আজকের কাশ্মীর ভ্রমণ গাইডে আপনাদের ভারতীয় জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ অঞ্চল ভ্রমণ প্যাকেজ নিয়ে আলোচনা করবো। এই প্যাকেজের মাধ্যমে আপনারা কম খরচে কাশ্মীরের দর্শনীয় স্থান সমূহ ঘুরে দেখতে পারবেন।

BM Khalid Hasan Sujon

বাংলাদেশ থেকে কাশ্মীর ভ্রমণ প্যাকেজ ২০২৫

  • কাশ্মীর ভ্রমণ প্যাকেজ মূল্য: ২৭,৪৭৫ টাকা (প্রতিজন)
  • প্যাকেজ মেয়াদ: ৬ রাত ৭ দিন
  • প্যাকেজ কোড: IND-R-293
  • কাশ্মীর ভ্রমণ প্যাকেজ – এখানে ক্লিক করে বুকিং করুন

ভ্রমণ প্যাকেজের বিস্তারিত তথ্য

প্রথম দিন: ঢাকা থেকে শ্রীনগর সম্ভব্য ফ্লাইট ভোর: ০৪:০৫ মিনিট, সকাল: ০৯:০০ টা। শ্রীনগর এয়ারপোর্ট থেকে পিক আপ, দুপুর ১২ টায় হোটেলে চেক ইন। সন্ধ্যায় শিকারা ডল লেক দেখে হোটেলে রাত্রিযাপন।

দ্বিতীয় দিন: সকালে ঘুর থেকে উঠে নাস্তা শেষে সোনমার্গ (Sonmarg), গ্লেসিয়ার পয়েন্ট (Glacier point) ঘুরে হোটেলে ফিরে ডিনার শেষে রাত্রিযাপন।

তৃতীয় দিন: সকালের নাস্তা শেষে শ্রীনগর থেকে পেহেলগাঁও (Pahalgam) গিয়ে রাতের খাবার খেয়ে সেখানকার হোটেলে রাত্রিযাপন।

BM Khalid Hasan Sujon

চতুর্থ দিন: হোটেল থেকে সকালের নাস্তা করে পেহেলগাঁও (Pahalgam), লোকাল সিটি (Local city), বেতাব ভ্যালি (Betaab valley), আরো-ভ্যালি (Aro valley) ঘুরে রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে রাত্রিযাপন।

পঞ্চম দিন: সকালে নাস্তা করে পেহেলগাঁও (Pahalgam) থেকে শ্রীনগর (Srinagar) গিয়ে, গুল্নর্গ স্নো পয়েন্ট (Gulmarg snow point) ঘুরে রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে রাত্রিযাপন।

ষষ্ঠ দিন: সকালের নাস্তা শেষে শ্রীনগর লোকাল সিটি (Srinagar local city), শালিমার বাগ (Shalimar bagh), চশমা শাহি (Chashme shahi) ঘুরে রাতের খাবার খেয়ে হোটেলে রাত্রিযাপন।

সপ্তম দিন: সকালে হোটেল থেকে চেক-আউট করে শ্রীনগর এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস। শ্রীনগর থেকে ঢাকা ফ্লাইট সকাল ০৯:০০ টা।

BM Khalid Hasan Sujon

কাশ্মীর ভ্রমণ প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত

  • ষ্ট্যান্ডার্ড হোটেলে ৬ রাত রাত্রিযাপন
  • সকাল ও রাতের খাবার
  • নন-এসি পার্সোনাল ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস
  • সাইটসিং
  • গাইড সার্ভিস

কাশ্মীর ভ্রমণ প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত নয়

  • যাওয়া-আসা বিমান টিকেট
  • ভিসা প্রসেসিং
  • ব্যাক্তিগত কোনো খরচ (কোনো কিছু কোনাকাটা)
  • দুপুরের খাবার
  • সকল প্রকার টিপস
  • কোন ঔষধ
  • দুর্ঘটনা জনিত কোনো প্রকার বীমা
  • প্যাকেজে অন্তর্ভুক্ত হয়নি এমন কোনো সার্ভিস
  • অনাকাঙ্ক্ষিত খরচ যেমন প্রাকৃতিক দূর্যোগ, হরতাল, অবরোধ জনিত কারণে ইত্যাদি।

সাথে যা যা নিবেন

  • কাশ্মীর প্রচুর ঠান্ডা হওয়ায় ভারী শীতের কাপড়।
  • পাহাড়ি পথে নিরাপদে হাঁটার জন্য কেডস।
  • রোদ থেকে নিরাপদ থাকতে সানক্যাপ ও সানগ্লাস।
  • বৃষ্টি থেকে নিরাপদ থাকতে ছাড়া বা রেইনকোট।
  • বাইনোকুলার, ক্যামেরা, মোবাইল।
  • স্লিপার, টুথপেষ্ট, টুথব্রাশ ও তোয়াল।
  • নিজের প্রয়োজনে জরুরী ঔষধ।
  • আপনার দৈনিক প্রয়োজনীয় টুকটাক জিনিসপত্র।

বিশেষ শর্তাবলী

  • সর্বনিন্ম ৪ জন হতে হবে কারণ পার্সোনাল ট্রান্সপোর্ট সার্ভিস দেওয়া হয়।
  • গ্রুপ বা কর্পোরেট ট্যুরের জন্য আকর্ষণীয় মূল্য ছাড়।
  • সময়ের সাথে প্যাকেজ মূল্য যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। 
  • বছরের যেকোনো সময় এই প্যাকেজ নিয়ে কাশ্মীর ভ্রমণ করতে পারবেন (ঈদ ও পূজার ছুটি ব্যতিত)।

চাইল্ড পলিসি

  • শূন্য (০) থেকে ৫ বছরের পূর্ব পর্যন্ত শিশুদের জন্য গাড়ির সিট ও হোটেল বেড মা-বাবার সাথে শেয়ার করতে হবে।
  • ৫ বছর থেকে ১২ বছরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৮০% খরচ দিতে হবে।

কাশ্মীর ভ্রমণের উপযুক্ত সময়

কাশ্মীর বছরের যেকোনো সময় ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে ভালো লাগবে। তবে বিশেষ সময় কাশ্মীরে বিশেষ সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। যারা কাশ্মীর গিয়ে বরফের রাজ্যে ডুবে থাকতে চান তারা ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি মাসে যেতে পারেন।

যারা সবুজ ও ফলের কাশ্মীর দেখতে চান তাদের জন্য ভ্রমণের উপযুক্ত সময় এপ্রিল মাস থেকে মে মাস পর্যন্ত। এ সময় কাশ্মীরের চারিদিকে ফুলে ভরা থাকে, বিশেষ করে টিউলিপ ফুল।

কোথায় থেকে কেনাকাটা করবেন

জম্মু কাশ্মীরে কম খরচে প্রচুর ফল কিনতে পারবেন।কেনাকাটা করার জন্য জম্মুর রঘুনাথ টেম্পল পর্যটকদের কাছে বেশ পরিচিত। এখানে সব কিছু পেয়ে যাবেন। যারা কাশ্মীরের শাল কিনতে চাচ্ছেন তারা অবশ্যই দামাদামি করে কিনবেন।

মনে রাখবেন ভালো কাশ্মীর শালের দাম সর্বনিন্ম ৩ হাজার রুপি। যারা জুয়েলারি, ব্যাগ, কয়েন বক্স ও শো-পিস কিনতে চান তারা পেহেলগাম থেকে কিনতে পারবেন।

কাশ্মীরের দর্শনীয় স্থান সমূহ

কাশ্মীর ভ্রমণে গিয়ে সেখানে দেখার মতো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। ভ্রমণ পিপাসুদের সুবিধার জন্য নিচে উল্লেখযোগ্য কয়েকটি দর্শনীয় স্থানের নাম উল্লেখ করা হল।

শ্রীনগর: বিমান থেকে শ্রীনগর এয়ারপোর্টে নামলে আপনার চোখে পড়বে দূরে পাহাড়ের চূড়ায় বরফের সাদা তুষার কনা। শ্রীনগর শহর ঘেরার পাশাপাশি এখানে রয়েছে হযরত বাল মসজিদ, টিউলিপ গার্ডেন, মোঘল গার্ডেন, নাগিন লেক, ডল লেক ও আরডল লেকের ভাসমান শহর যা আপনার ভালো লাগবে।

পেহেলগাম: শ্রীনগর শহর থেকে ৯৭ কিলোমিটার দূরে পেহেলগাম। এখানকার রাস্তায় দুপাশে আপেল বাগান। রয়েছে বেতাব ভ্যালি, লিদান নদী, আরু ভ্যালি, ধাবিয়ান, কাশ্মীর ভ্যালী পয়েন্ট, চান্দেওয়ারি, কানিমার্গ, মিনি সুইজারল্যান্ড খ্যাত বাইসারানে ও ঘোড়ায় বসে ঘুরে বেড়ানোর জন্য পেহেলহাম ভিউ।

গুলমার্গ: শ্রীনগর থেকে ৫২ কিলোমিটার দূরে গুলমার্গ। এখানে সবুজ ঘাসে বিস্তৃত মাঠ, যেখানে সারা বছর বরফে ঢাকা থাকে। এখানে রয়েছে গলফ কোর্স, আফারওয়াত পিক, সেন্ট ম্যারি চার্চ, বাবা ঋষির মাজার, গন্ডোলা। এছাড়া এখানে ক্যাবল কারে প্যারাগ্লাইডিং করতে পারবেন।

সোনামার্গ: শ্রীনগর থেকে ৪২ কিলোমিটার দূরে সোনামার্গ। এখানে দেখতে পাবেন সিন্ধু নদী, উপত্যকা ও ঝর্ণা, থাজিয়ান হিমবাহ, স্লোজিং, স্নো বাইক ও ঘোড়ায় চড়ে ঘুরতে পারবেন।

কাশ্মীর ভ্রমণ টিপস

  • ট্র্যাভেল এজেন্সির মাধ্যমে কমপক্ষে ১ মাস আগে প্যাজেক বুকিং করতে হবে।
  • কাশ্মীর প্রচুর ঠান্ডা তাই ভারী শীতের কাপড় সাথে নিবেন।
  • কোনো কিছু কেনার আগে অবশ্যই দামাদামি করে নিবেন।
  • কাশ্মীরের খাবারে মশলাল পরিমান বেশি থাকে তাই পরিমান মতো খাবেন।
  • রাত ৮ টার পর সব দোকান-পাট বন্ধ হয়ে যায় তাই আগে খাবার ও কেনাকাটা করে নিবেন।
  • স্থানীয় মানুষ ও নিজের ভ্রমণ সাথীদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন।
  • ভ্রমণকারীদের সাথে যেকোনো সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।
  • সাথে কোনো প্রকার মাদকদ্রব্য বা সেবান করা যাবে না।
  • বাংলাদেশের সম্মান হানী হয় এমন কোনো কাজ করবেন না কারণ আপনি বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন।

আরো পড়ুন