আলেকজান্ডার মেঘনা বীচ, লক্ষীপুর

লক্ষীপুর জেলা সদর থেকে ৪০ কিলোমিটার এবং রামগতি উপজেলা থেকে ১৫ কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত আলেকজান্ডার মেঘনা বীচ। যা স্থানীয় লোকদের কাছে চর আলেকজান্ডার নামে পরিচিত। চর আলেকজান্ডার মেঘনা বীচ বর্তমানে লক্ষীপুরের জনপ্রিয় একটি পর্যটন কেন্দ্রে পরিনতি হয়েছে।

উপকূলের বেড়িবাঁধ রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নির্মিত মেঘনা বেড়িবাঁধ দেওয়ার পর আলেকজান্ডার মেঘনা বীচে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ঘুরতে আসে। বাঁধের গায়ে আঁচড়ে পড়া মেঘনা নদীর ঢেউ, চারপাশে সবুজ মাঠ সব মিলিয়ে প্রাকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন। চাইলে নৌকায় ঘুরে বেড়াতে পারবেন মেঘনা নদীতে এবং জেলেদের মাছ ধরার দৃশ্য দেখতে পারবেন।

বাঁধের উপর দাঁড়িয়ে মুক্ত বাতাসে দীর্ঘশ্বাস নিতে নিতে মেঘনা নদীর সৌন্দর্য এবং শেষ বিকালের সূর্যাস্ত দেখতে পারবেন। নদীর পাড়ে ছাতার নিচে বসার জন্য রয়েছে বেঞ্চ। হাতে সময় থাকলে চর আলেকজান্ডারের চেয়ারম্যান ঘাট ছাড়াও সূবর্ণ চর, নুরু পাটোয়ারীর চর ঘুরে দেখে আসতে পারেন।

নদীর পাড়ে পাবেন ফুসকা, চটপটি, চা, কফি, বাদাম, ডাব সহ নানা ধরনের দোকান। এখানে বাচ্চাদের খেলনার দোকান আছে। এখানকার হোটেল গুলোতে নদীর তাজা ইলিশ মাছ ভাজি, হাঁসের মাংস, রুটি সহ বিভিন্ন আইটেমের খাবার পাবেন। শীতকালে খেজুরের রসের পায়েস এখানকার প্রসিদ্ধ খাবার।

BM Khalid Hasan Sujon

নামকরণ

১৯২৫ সালের দিকে এই এলাকার গোড়াপত্তন হয়। ইংরেজ শাসন আমলে রামগতি এসিল্যান্ড অফিসে আলেকজান্ডার নামের একজন ভদ্রলোক রেভিনিউ কালেকটর পদে নিয়োগ দেন। ভদ্রলোক তার আশ্চর্য দক্ষতায় এই এলাকার মানুষের মন জয় করেন। মিস্টার আলেকজান্ডারকে যখন তার কর্মস্থল থেকে বিদায় নিতে হয় তখন এলাকার মানুষ তার নামে এই এলাকার নামকরণ করেন আলেকজান্ডার।

আলেকজান্ডার মেঘনা বীচ কিভাবে যাবেন

ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে আলম, রয়েল, ইকোনো, গ্রীনল্যান্ড এক্সপ্রেস, ঢাকা এক্সপ্রেস সহ লক্ষীপুরগামী যেকোনো বাসে চড়ে লক্ষীপুর আসতে পারবেন। ঢাকা টু লক্ষীপুর নন-এসি বাস ভাড়া ৭০০ টাকা এবং এসি বাস ভাড়া ১,০০০ টাকা, যেতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা।

বাস থেকে লক্ষীপুর সিনেমা হলের সামনে নেমে সেখান থেকে লোকাল বাস বা সিএনজি করে আলেকজান্ডার ঘাট পর্যন্ত যেতে পারবেন। জনপ্রতি ভাড়া লাগবে ৬০ টাকা।

BM Khalid Hasan Sujon

আবার ঢাকা থেকে নোয়াখালীগামী হিমাচল বা একুশে এক্সপ্রেস বাসে চড়ে সোনাপুর নেমে যাবেন। সেখান থেকে সূবর্ণচর এক্সপ্রেস বা সিএনজি করে আলেকজান্ডার চেয়ারম্যান ঘাট যেতে পারবেন।

এছাড়া চট্টগ্রাম থেকে রামগতি উপজেলাগামী বাসে চড়ে আলেকজান্ডার লঞ্চ ঘাট যেতে পারবেন।

কোথায় থাকবেন

রামগতি উপজেলা পরিষদে ডাকবাংলো ও জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মেঘনা পাড়ে একটি ডাকবাংলো আছে। অনুমতি নিয়ে ৫০০ থেকে ১০০০ টাকায় এখানে থাকতে পারবেন।

এছাড়া থাকার জন্য লক্ষীপুর জেলা শহরে চলে আসুন। সেখানে হোটেল আবেহায়াত (01718-428922), হোটেল ইউনিক, (01732-202256), এন আর গেস্ট হাউজ (01623-619053), হোটেল গোলাপ (01860-188302), সোনার বাংলা গেস্ট হাউজ (01733-687166), স্টার গেস্ট হাউজে (01726-123719) থাকতে পারবেন।

BM Khalid Hasan Sujon

কোথায় খাবেন

ভালো মানের খাবার জন্য লক্ষীপুর জেলা শহরে অবস্থিত তৃপ্তি হোটেল, রাজমহল হোটেল, নূর জাহান হোটেল, কুটুম বাড়ি রেস্টুরেন্ট, আব্বাস আলী রেস্টুরেন্ট, সেন্ট মার্টিন রেস্টুরেন্ট, মোহাম্মদীয়া হোটেল, ফুড গার্ডেন রেস্টুরেন্ট থেকে পছন্দসই খাবার খেতে পারেন।

এখানকার ঐতিহ্যবাহী খাবারের মধ্যে মেঘনার তাজা ইলিশ মাছ ও মহিষের দুধের দই বিখ্যাত।

আশেপাশের দর্শনীয় স্থান

আশেপাশের দর্শনীয় স্থান সমূহের মধ্যে আস সালাম জামে মসজিদ, তিতা খাঁ মসজিদ, দালাল বাজার জমিদার বাড়ি, খেয়াসাগর দিঘী, জ্বীনের মসজিদ, মতিরহাট সৈকত উল্লেখযোগ্য।