লক্ষীপুর জেলা থেকে প্রায় ২১ কিলোমিটার দূরত্বে রায়পুর উপজেলার দেনায়েতপুর নামক স্থানে অবস্থিত ঐতিহাসিক জ্বীনের মসজিদ। ১৮৮৮ সালের শেষার্ধে নির্মিত এই মসজিদটি এলাকায় “মৌলভী আবদুল্লাহ সাহেবের মসজিদ” বলে পরিচিত। মসজিদের সামনে সিঁড়ির কাছে নেমপ্লেটে “মসজিদ-ই জামে আব্দুল্লাহ” উল্লেখ করা হয়েছে।
ভারতের দিল্লীর শাহী জামে মসজিদের নমুনায় লক্ষীপুরে ঐতিহাসিক জ্বীনের মসজিদ স্থাপিত হয়। অতি অল্প সময়ে মসজিদটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার ফলে জ্বীনের মসজিদ বলা হয়। অল্প সময়ের মধ্যে মসজিদ তৈরি করা ও পাশের দুইটি দিঘী খনন করা সাধ্যের অতীত ছিল।
প্রচলিত আছে, রাতের আধারে জ্বীনেরা এই মসজিদটি নির্মান করা হয়েছে। জ্বীনেরা কয়েক বছর পর্যন্ত এখানে ইবাদত করেছিল। স্থানীয় লোকেরা মসজিদ থেকে জ্বীনদের জিকিরের আওয়াজ শুনতে পেত।
স্থাপত্যশৈলী
প্রায় ৫৭ শতাংশ জায়গায় উপর নির্মাত মসজিদের দৈর্ঘ্য ১১০ ফুট ও প্রস্থ ৭০ ফুট এবং উচ্চতা ১০ ফুট। মসজিদের সামনে ২৫ ফুট উচ্চতার ৩ টি গম্বুজ আছে। মসজিদের ভেতরের উচ্চতা ১৫ ফুট সেখানে সিঁড়িযুক্ত ১৩ টি ধাপ আছে। দেয়ালের প্রস্থ ৮ ফুট।
মসজিদের তলদেশে প্রায় ২০ ফুট মাটির নিচে ৩ টি কামরা বিশিষ্ট ১ টি গোপন ইবাদতখানা আছে। যেখানে বসে ধ্যানে মগ্ন থাকতেন এই মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আব্দুল্লাহ। বর্তমানে ইবাদাতখানাটি পানির কূপে পরিণত হয়েছে। মসজিদের সামনে ও পাশে ১ টি করে পুকুর আছে।
জ্বীনের মসজিদ লক্ষীপুর যাওয়ার উপায়
ঢাকার সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল থেকে রয়েল, আলম, ইকোনো, আলবারাকা, ঢাকা এক্সপ্রেস ও গ্রীনল্যান্ড পরিবহনে চড়ে লক্ষীপুর আসতে পারবেন। ঢাকা থেকে লক্ষীপুর বাস ভাড়া ৭০০ থেকে ১,০০০ টাকা, যেতে সময় লাগবে সাড়ে ৬ থেকে ৭ ঘন্টা।
লক্ষীপুর জেলা শহর থেকে স্থানীয় পরিবহন বাস/সিএনজি/অটোরিকশা করে রায়পুর উপজেলা হয়ে মাওলানা আবুল খায়ের রোডে অবস্থিত জ্বীনের মসজিদ যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
রাত্রিযাপন করার জন্য লক্ষীপুর জেলা শহরে চলে আসুন। সেখানে হোটেল আবেহায়াত (01718-428922), সোনার বাংলা গেস্ট হাউজ (01733-687166), এন আর গেস্ট হাউজ (01623-619053), হোটেল গোলাপ (01860-188302), হোটেল ইউনিক, (01732-202256), স্টার গেস্ট হাউজে (01726-123719) থাকতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
ভালো মানের খাবার জন্য লক্ষীপুর জেলা শহরে অবস্থিত সেন্ট মার্টিন রেস্টুরেন্ট, রাজমহল হোটেল, নূর জাহান হোটেল, কুটুম বাড়ি রেস্টুরেন্ট, আব্বাস আলী রেস্টুরেন্ট, তৃপ্তি হোটেল, ফুড গার্ডেন রেস্টুরেন্ট, মোহাম্মদীয়া হোটেল থেকে পছন্দসই খাবার খেতে পারেন।
আশেপাশের আরো দর্শনীয় স্থান
লক্ষীপুর জেলায় অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এর মধ্যে তিতা খাঁ মসজিদ, আস সালাম জামে মসজিদ, চর আলেকজান্ডার, দালাল বাজার জমিদার বাড়ি, খেয়াসাগর দিঘী, মতিরহাট সৈকত উল্লেখযোগ্য।