গ্রীন ভ্যালী পার্ক (Green vally park) নাটোর জেলার লালপুর উপজেলা সদর থেকে ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। নাটোরে যতগুলো পার্ক ও চিত্তবিনোদন কেন্দ্র রয়েছে তার মধ্যে আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর পার্ক। নানা ধরনের ফুল গাছ দিয়ে সাজানো হয়েছে।
১২৩ বিঘা জায়গায় উপর নির্মিত এই পার্কে সকল বয়সী দর্শনার্থীদের চিত্তবিনোদনের জন্য বুলেট ট্রেন, মিনি ট্রেন, নাগরদোলা, ওয়েবপুল, ম্যারিগো রাউন্ড, হানি সুইং পাইরেট শীপ, প্যাডেল বোট, স্পিডবোট সহ ১৬ টি রাইড রয়েছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মণ্ডিত এই পার্কে প্রায় ৩০ একর জায়গা জুড়ে একটি লেক রয়েছে। লেকের জলে স্পিডবোট ও প্যাডেল বোট চড়ে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। দর্শনার্থীদের বসার জন্য বিভিন্ন স্থানে বেঞ্চ আছে। এছাড়া পার্কের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন স্থানে নানা ধরনের ভাস্কর্য রয়েছে।
গ্রীন ভ্যালী পার্কে একাধিক পিকনিক স্পট, শ্যুটিং স্পট, সুইমিং পুল, কনসার্ট এন্ড প্লে গ্রাউন্ড, এ্যাডভেঞ্চার ও সভা-সেমিনারের স্থান রয়েছে। এছাড়া শপ, ক্যাফেটেরিয়া, কার পাকিং, ডেকোরেশন, নামাজের স্থান, সার্বক্ষানিক নিরাপত্তা ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা এবং থাকার জন্য আবাসিক ব্যবস্থা রয়েছে।
পার্কের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। এই পার্কে সব বয়সী দর্শনার্থীদের জন্য চিত্তবিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে।
গ্রীন ভ্যালী পার্ক প্রবেশ মূল্য ও সময়সূচী
গ্রীন ভ্যালী পার্কের প্রবেশ মূল্য জনপ্রতি ৬০ টাকা। প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত পার্কটি খোলা থাকে। পার্কটি সপ্তাহের ৭ দিনই খোলা থাকে।
পার্কে এন্ট্রি টিকেটের সাথে কয়েকটি রাইড ও খাওয়া দাওয়ার প্যাকেজ রয়েছে। বাহিরের কোনো খাবার পার্কের ভিতর নিয়ে যেতে পারবেন না।
পার্কের বিভিন্ন রাইড ফি
- পার্কে মোট ১৬ টি রাইড রয়েছে, প্রতিটি রাইডের টিকেট মূল্য ৩০ থেকে ৬০ টাকা।
- ওয়াটার পার্ক লকার ফি – ৫০ থেকে ৫০০ টাকা।
- ওয়াটার পার্ক টিকেট – ২৫০ টাকা (দুপুর ১২ টা থেকে ৪ টা পর্যন্ত)।
- সুইমিং পুল টিকেট – ১৫০ টাকা।
- গাড়ি পাকিং – ১০ থেকে ৩০০ টাকা।
যোগাযোগ তথ্য
- ঠিকানা: গ্রীন ভ্যালী পার্ক, লালপুর, নাটোর, রাজশাহী
- মোবাইল নাম্বার: 01712-040573, 01328-771914, 01712-151388, 01792-900994
- ইমেইল: greenvalleyparkltd@gmail.com
- ফেসবুক পেজ
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে ঈশ্বরদী বাঘা রুটে নিয়মিত চলাচলকারী হানিফ, একাতা, সোহাগ, গ্রীন লাইন, দেশ ট্রাভেল, শ্যামলী, ন্যাশনাল পরিবহনে চড়ে সরাসরি লালপুর আসতে পারবেন। রাজশাহী সদর শহর থেকে চারঘাট – বাঘাগামী বাসে চড়ে বাঘা নেমে যাবেন। সেখান থেকে সিএনজি বা অটোরিকশা করে লালপুর আসতে পারবেন।
নাটোর বাইপাস, ঈশ্বরদী, বনপাড়া থেকে লালপুর আসার জন্য বাস, সিএনজি পাবেন।
ঢাকা থেকে ট্রেনে আসতে চাইলে বুড়িমারী এক্সপ্রেস, রংপুর এক্সপ্রেস, চিলাহাটি এক্সপ্রেস, কুড়িগ্রাম এক্সপ্রেস, পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, লালমনি এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস, নিলসাগর এক্সপ্রেস ও একতা এক্সপ্রেস ট্রেনে চলে নাটোর বা ঈশ্বরদী যেকোনো স্টেশনে নেমে যাবেন। রেলস্টেশন থেকে সিএনজি বা অটোরিকশা করে লালপুর যেতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
পার্কে খাবার জন্য ক্যাফে রয়েছে। সেখান থেকে বিভিন্ন ধরনের ফাস্ট ফুড, বিরিয়ানি, পোলাও, খিচুড়ি, সাদা ভাত, মাছ, মাংস খেতে পারবেন। এছাড়া ফুসকা, চটপটি, ঝালমুড়ি, আইসক্রিমের দোকান রয়েছে।
এছাড়া নাটোর শহরে কুইন্স রেস্টুরেন্ট, সাদেক হোটেল, ইসলামিয়া পোচুর হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, নিউ নয়ন হোটেল ও বিসমিল্লাহ হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট থেকে পছন্দসই খাবার খেতে পারবেন।
নাটোর ভ্রমণে চলন বিল ও রাণী ভবানী সুস্বাদু মাছ, নাটোরের কাঁচাগোল্লা অবশ্যই খাবেন।
কোথায় থাকবেন
গ্রীন ভ্যালী পার্কের ভিতর থাকার জন্য আবাসিক হোটেল রয়েছে। দর্শনার্থীদের সেখানে থাকার জন্য সু-ব্যবস্থা রয়েছে।
নাটোর থাকার জন্য অনেক আবাসিক হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে হোটেল ভি.আই.পি (01718-673735), হোটেল প্রিন্স (01746-029429), হোটেল মিল্লাত (01711-703346), নাটোর বোর্ডিং (0771-62001), উত্তরা মোটেল আবাসিক (01753-982566) উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া নাটোর জেলা পরিষদের ডাকবাংলো রয়েছে সেখানে থাকতে পারেন (077166932)। নাটোর আবাসিক হোটেল ভাড়া সহ বিস্তারিত তথ্য জানতে এই আর্টিকেলটি পড়ুন।
নাটোরের আরো দর্শনীয় স্থান সমূহ
নাটোর জেলায় অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এর মধ্যে নাটোর রাজবাড়ী, উত্তরা গণভবন, চলনবিল জাদুঘর, হালতির বিল, চলনবিল উল্লেখযোগ্য।
