রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বাংলাদেশের আমের রাজধানী হিসাবে পরিচিত। বর্তমানে এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তর ও বাংলাদেশের বৃহৎ আমের বাজার রাজশাহী বিভাগের চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট আম বাজার (Kansat Mango Market)। পাকা আমের সিজনে এখানে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমের বাজার জমে উঠে এবং প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকার আম বেচাকেনা হয়।
রাজশাহীর চাঁপাইনবাবগঞ্জে আরো অনেক জায়গায় আমের বাজার থাকলেও পাইকারী ক্রেতা-বিক্রেতাদের কাছে কানসাট আম বাজার সবচেয়ে বড় ও বিখ্যাত। এখানে আপনি বিভিন্ন জাতের সুস্বাদু মিষ্টি আম পাবেন। ঝুড়িভর্তি আম কিনে বাসায় নিয়ে যেতে পারবেন।
কানসাট বিখ্যাত আমের বাজার দেখলে মনে হবে আপনি কোনো আমের স্বর্গ রাজ্যে আছেন। দেশের যত আম উৎপাদন করা হয় তার সিংহভাগ উৎপাদন হয় এই চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায়। প্রতিদিন এখান থেকে ২০০-২৫০ ট্রাক ভর্তি আম রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যাচ্ছে।
কানসাট আম বাজার যাওয়ার উপযুক্ত সময়
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম গুলো পরিপক্ক হবার পর মূলত কানসাট বাজারে আসা শুরু করে। সাধারণত মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে জুন মাসের পুরো সময় আম বাজার জমজমাট থাকে। তাই আপনারা যারা আম বাজার দেখতে বা আম কিনতে চান তারা জুন মাসে চলে আসবেন।
কিভাবে যাবেন
রাজধানী ঢাকা থেকে বাস বা ট্রেনে করে খুব সহজে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে পারবেন। ঢাকার গাবতলী ও কল্যানপুর বাস টার্মিনাল থেকে ন্যশনাল ট্রাভেলস, দেশ ট্রাভেলস, গ্রামীন ট্রাভেলস, তুহিন এলিট সহ চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী যেকোনো এসি নন-এসি বাসে বাসে চড়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে পারবেন।
ঢাকা থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এসি নন-এসি বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৮৫০ থেকে ১,৫০০ টাকা। এসব বাসে চড়ে সরাসরি কানসাট আম বাজারে নেমে যেতে পারবেন। এছাড়া চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে নেমে সিএনজি বা বাসে চড়ে আম বাজার যেতে পারবেন।
একদিনের ট্যুরে ঢাকা থেকে রাতের বাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ গিয়ে সারাদিন ঘুরে সন্ধ্যার বাসে আবার ঢাকা ব্যাক করতে পারেন।
ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যেতে পারবেন। সিট ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৫১৫ থেকে ১,১৭৩ টাকা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশন নেমে সিএনজি করে সরাসরি আম বাজার যেতে পারবেন।
কোথায় খাবেন
খাবার জন্য শিবগঞ্জ উপজেলায় মোটামুটি মানের খাবার হোটেল রয়েছে। এখান থেকে খাবার খেতে পারেন। ভালো মানের খাবার খাওয়ার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর যেতে হবে। সেখানে আলাউদ্দীন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, শরিফা হোটেল, ক্যাফে ভিলেজ, ভাই ভাই হোটেল, সারুয়ার হোটেল সহ অনেক খাবার হোটেল ও রেস্তোরাঁ আছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার বিখ্যাত আদি চমচম মিষ্টি খেয়ে দেখতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
থাকার জন্য চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে মোটামুটি মানের অনেক আবাসিক হোটেল আছে। এর মধ্যে স্কাই ভিউ ইন, হোটেল রোজ, হোটেল মহানন্দা, হোটেল আল নাহিদ, হোটেল স্বপ্নপুরী, হোটেল রাজ, হোটেল রংধনু, নবাবগঞ্জ বোডিং উল্লেখযোগ্য। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আবাসিক হোটেল সমূহের তথ্য জানুন।
ভালো মানের হোটেলে থাকতে চাইলে রাজশাহী শহরের যেতে হবে। রাজশাহী শহরে ভালো মানের হোটেল গুলোর মধ্যে নাইস ইন্টারন্যাশনাল, মুক্তা ইন্টারন্যাশনাল, ডালাস ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল হক্স ইন উল্লেখযোগ্য। এসব হোটেল ৫০০ থেকে ৪,০০০ টাকায় থাকতে পারবেন।
রাজশাহী জেলা শহর বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের মোটেল আছে। সেখানে ১,৯০০ থেকে ৪,৫০০ টাকায় এসি নন-এসি বিভিন্ন ধরনের রুম পাবেন।
আশেপাশের দর্শনীয় স্থান
চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম বাজার ঘুরে দেখার পাশাপাশি আশেপাশের দর্শনীয় স্থান সমূহ ঘুরে দেখে আসতে পারেন। এর মধ্যে ছোট সোনা মসজিদ, আলপনা গ্রাম, দারাসবাড়ি মসজিদ, কানসাট জমিদার বাড়ি উল্লেখযোগ্য।
