ঐতিহাসিক পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি (Pakutia Zamindar Bari) টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার ধলেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত। ১৯০০ শতাব্দীর প্রথমে কলকাতা থেকে আসা রামকৃষ্ণ মন্ডল পাকুটিয়ায় জমিদারী আরম্ভ করার পর ১৯১৫ সালে প্রায় ১৫ একর জায়গায় উপর একই নকশার পরপর ৩ টি অট্টালিকা নির্মাণ করেন। জমিদার বাড়িটি তখন তিন মহিলা বা তিন তরফ নামে পরিচিত হয়ে উঠে। জমিদাররা তখন প্রজাদের জমিদার বাড়ির সামনে দিয়ে জুতা পায়ে ও ছাতা মাথায় দিয়ে যেতে দিতো না।
প্রত্যোটি জমিদার বাড়ির মাঝ বরাবর মুকুট হিসাবে ফুল ও লতাপাতার অলংকরণে কারুকার্য মন্ডিত পূর্ণাঙ্গ দুইটি সুন্দরী নারীর মূর্তি ছিল। রেলিং টপের উপর বিভিন্ন ভাবে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য সুন্দর সুন্দর ছোট নারী মূর্তি। অট্টালিকার এসব শিল্প সংস্কৃতি ও কারুকাজ দেখে যেকেউ মুগ্ধ হবে। বিশেষ করে পূজা মন্ডলের শিল্পিত শতবছরের কারুকাজ পর্যটকদের মুগ্ধ করে।
বর্তমানে পাকুটিয়া জমিদার বাড়িতে বি.সি.আর.জি.ডিগ্রি কলেজ চালু আছে। ৩ টি জমিদার বাড়ির সামনে ৩ টি নাট মন্দির এবং মাঠের মাঝখানে দ্বিতল বিশিষ্ট নাচঘর রয়েছে। এছাড়া জমিদার বাড়ির পাশে একটি বড় পুকুর আছে।
পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি যাওয়ার উপায়
ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে পাকুটিয়াগামী এস বি লিংক পরিবহনে চড়ে সাটুরিয়া পার হয়ে পাকুটিয়া বাজার নেমে যাবেন। সেখান থেকে পায়ে হেঁটে জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন। এছাড়া ঢাকার মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে ধলেশ্বরী, বিনিময়, ঝটিকা ইত্যাদি বাসে টাঙ্গাইল যেতে পারবেন। জনপ্রতি ভাড়া লাগবে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।
ঢাকার আরিচা রোডে কালামপুর বাস টার্মিনাল থেকে সাটুরিয়া হয়ে পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন। এছাড়া টাংগাইল শহর থেকে দেলদুয়ার হয়ে লাউহাটি দিয়ে জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন।
ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে উত্তরবঙ্গগামী যে ট্রেন টাঙ্গাইল থাকে, উক্ত ট্রেনে করে টাংগাইল নেমে যাবেন। টাঙ্গাইল থেকে লোকাল বাস বা সিএনজি করে দেলদুয়ার ও লাউহাটি হয়ে জমিদার বাড়ি যেতে পারবেন।
টাঙ্গাইল জেলার পাকুটিয়া জমিদার বাড়ির পাশে মানিকগঞ্জ জেলায় বালিয়াটি জমিদার বাড়ি অবস্থিত। দুইটা জমিদার বাড়ি দুই জেলায় অবস্থিত হলেও অবস্থান পাশাপাশি। সিএনজি করে ৩০ টাকা ভাড়া দিয়ে পাশের বালিয়াটি জমিদার বাড়ি একদিনে ঘুরে আসতে পারেন।
কোথায় থাকবেন
টাঙ্গাইল জেলা শহর থাকার জন্য অনেক আবাসিক হোটেল আছে। এসব হোটেল ৫০০ থেকে ৪,৫০০ টাকা মধ্যে থাকতে পারবেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হোটেল প্রিন্স (01719-629488), হোটেল সাগর (01711-186115), হোটেল যমুনা (01716-140681), হোটেল তাজমহল (01752-650000), হোটেল আপ্যায়ন (01717-052820)।
টাঙ্গাইল আবাসিক হোটেল সমূহের নাম, ঠিকানা, ভাড়া ও সুযোগ সুবিধা জানুন।
কোথায় খাবেন
খাবার জন্য নাগরপুর উপজেলার শহরে ভালো মানের হোটেল না থাকলেও টাঙ্গাইল জেলা শহরে খাবার জন্য ভালো মানের হোটেল ও রেস্টুরেন্ট আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য নূরজাহান রেস্টুরেন্ট এন্ড পার্টি ভেন্যু, সুগন্ধা রেস্টুরেন্ট, সানকি রেস্টুরেন্ট, লাজিজ, মেজবান দাওয়াত রেস্টুরেন্ট ও জজ কোর্ট হোটেল উল্লেখযোগ্য। এছাড়া টাঙ্গাইলের বিখ্যাত মিষ্টি চমচম খেতে ভুলবেন না।
টাঙ্গাইলের জমিদার বাড়ি সমূহ
টাঙ্গাইল জেলায় অনেক ঐতিহাসিক জমিদার বাড়ি আছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য করটিয়া জমিদার বাড়ি, মহেরা জমিদার বাড়ি, নাগরপুর জমিদার বাড়ি, দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি, ধনবাড়ী জমিদার বাড়ি।