বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্ক, যশোর

বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্ক (Binodia family park) যশোর সদর জেলা শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে সেনানিবাসের শানতলা নামক স্থানে অবস্থিত। ১৯৯৮ সালে অবসর প্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্ণেল ফয়েজ আহমেদ এই পার্কটি তৈরি করেন। পূর্বে এই স্থানটি ছিলো উন্মুক্ত, পরে পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে।

পার্কে আসা দর্শনার্থীদের চিত্তবিনোদনের জন্য এখানে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের আকর্ষণীয় রাইড, শিশু পার্ক, কৃত্রিম ঝর্ণা, কনফারেন্স হল, নদী, রবিনহুডের বাড়ি, মিনি চিড়িয়াখানা ও খাবার ব্যবস্থা। এসব রাইডে চড়ার জন্য আলাদা টিকেট কাটতে হয়।

এছাড়া পার্কে রয়েছে পিকনিক স্পট, ঈদ পূনর্মিলনী, বৈশাখী মেলা, স্কুলের অনুষ্ঠান সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের সুব্যবস্থা রয়েছে। শুরুতে বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্কটি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও বর্তমানে প্রবেশ টিকেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্ক প্রবেশ টিকেট মূল্য

পার্কে যেকোনো প্রাপ্ত বয়স্ক দর্শনার্থীদের জন্য প্রবেশ টিকেট মূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা, ছোট বাচ্চাদের প্রবেশ টিকেট মূল্য ৩০ টাকা। এছাড়া বিভিন্ন রাইড উপভোগ করার জন্য ২০ থেকে ৩০ টাকা দিয়ে টিকেট কাটতে হবে।

পিকনিক করার জন্য রান্না ঘর, পানি ও কার্পেট সুবিধা স্পট ভাড়া ১,০০০ থেকে ৩,৫০০ টাকা। ঈদ পূনর্মিলনী সহ যেকোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য প্রতি ঘন্টা ৫০০ টাকা প্রদান করতে হবে।

এছাড়া পার্কে মোটরসাইকেল পার্কিং ১০ টাকা, মাইক্রো বাস বা জীপ গাড়ি পাকিং ২০ টাকা এবং বাস পার্কিং ১০০ টাকা।

পার্কটি সপ্তাহের সাত দিনই সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।

BM Khalid Hasan Sujon

কিভাবে যাবেন

দেশের যেকোনো স্থান থেকে বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্কে আসতে চাইলে প্রথমে যশোর জেলা শহরে আসতে হবে। যশোর শহরের যেকোনো স্থান থেকে অটোরিকশা বা সিএনজি করে পালবাড়ী মোড় আসতে হবে। পালবাড়ী মোড় থেকে অটোরিকশা বা সিএনজি করে পার্কে যেতে পারবেন। অটোরিকশা বা সিএনজিতে জনপ্রতি ভাড়া লাগবে ৫-১০ টাকা।

রাজধানী ঢাকা থেকে খুব সহজে সড়ক ও আকাশ পথে যশোর জেলা শহর আসতে পারবেন।

বাসে ঢাকা থেকে যশোর: ঢাকার গাবতলী, কল্যাণপুর, কলাবাগান, নবীনগর বাস টার্মিনাল থেকে শ্যামলী, সোহাগ, হানিফ, টুঙ্গিপাড়া, এম আর, গ্রীন লাইন, ঈগল, দেশ ট্র্যাভেল, ইমাদ, গোল্ডেন লাইন পরিবহনে চড়ে যশোর আসতে পারবেন। এসি/নন-এসি বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৬৫০ টাকা থেকে ১,৫০০ টাকা।

ট্রেনে ঢাকা থেকে যশোর: ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন প্রতি রবিবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিটে, বেনাপোল এক্সপ্রেস প্রতি বুধবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন রাত ১১ টা ৪৫ মিনিট, সুন্দরবন এক্সপ্রেস বুধবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সকাল ৮ টা ১৫ মিনিটে এবং রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস প্রতি সোমবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে যশোর ছেড়ে আসে। ট্রেনের সিটভেদে জনপ্রতি টিকেট মূল্য ৪১০ থেকে ১,৯২৭ টাকা।

BM Khalid Hasan Sujon

আকাশ পথে ঢাকা থেকে যশোর: ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউএস-বাংলা, বিমান বাংলাদেশ, নভোএয়ার ও এয়ার অ্যাস্ট্রা এয়ারলাইন্সে যশোর বিমানবন্দর আসতে পারবেন। সিট ভেদে জনপ্রতি বিমান ভাড়া ৪,৫০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

যশোর শহরে থাকার জন্য থাকার জন্য ভালো মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এগুলো হল হোটেল শাসম ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল, আর.এস ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল সিটি প্লাজা ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি।

এছাড়া মোটামোটি মানের বেশ কিছু আবাসিক হোটেল ও সরকারি গেস্ট হাউজ রয়েছে। এর মধ্যে মনিহার, চৌধুরী, মিডওয়ে, মিডটাউন, ম্যাগপাই, গ্রান্ড হোটেল উল্লেখযোগ্য। যশোর আবাসিক হোটেল মোবাইল নাম্বার সমূহ উল্লেখ করা হয়েছে।

কোথায় খাবেন

খাবার জন্য যশোর অনেক বড় বড় খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এগুলো মধ্যে নাজমা হোটেল, নূর হোটেল, লাক্সারি ডাউন, রোজ গার্ডেন, ক্যান্ডেল লাইট ক্যাফে, ক্যাফে ম্যারিওট, জলযোগ রেস্টুরেন্ট উল্লেখ্যযোগ্য।

এছাড়া যশোরের বিখ্যাত খেজুরের গুড়ের প্যারা ও সন্দেশ, জামতলার মিষ্টি, চুক নগরের বিখ্যাত চুই ঝালের মাংস, ধর্মতলার মালাই চা খেতে পারেন। 

যশোরের আশেপাশে আরো দর্শনীয় স্থান

বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্ক ছাড়াও যশোরের আশেপাশে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এর মধ্যে ফুলের রাজ্য গদখালি, যশোর কালেক্টরেট পার্ক, ভাসমান সেতু যশোর, সাগরদাঁড়ি মধুমেলা, জেস গার্ডেন পার্ক, যশোর রোড, যশোর রোড, বেনাপোল স্থল বন্দর উল্লেখ্যযোগ্য।