বেনাপোল স্থল বন্দর – বাংলাদেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর

যশোর জেলার শার্শা উপজেলার বেনাপোল শহরে অবস্থিত বেনাপোল স্থল বন্দর (Benapole land port) বাংলাদেশের বৃহত্তম স্থলবন্দর। এই স্থলবন্দরের আয়তন প্রায় ৯০ একর। এই বন্দরটি বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ দ্বারা পরিচালিত হয়।

বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশ-ভারত পণ্য রপ্তানি-আমদানি করা হয়। ভারত থেকে আমদানি করা ৯০% পণ্য কাচা তুলা, ভোগ্যপণ্য, যানবাহন, তৈরি পোশাক, মটর পার্টস, যানবাহন, প্রসাধণী সামগ্রী, রাসায়নিক দ্রব্য, শিশু খাদ্য, লোহা, স্টিল প্লেট  ইত্যাদি এই স্থলবন্দর দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে।

বাংলাদেশ থেকে ভারতে এই স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি করা পণ্য গুলো হল পাট ও পাট জাতীয় পণ্য, তৈরি পোশাক, প্লাস্টিক, মাছ ইত্যাদি।

বেনাপোল স্থলবন্দর কাস্টমস স্টেশন হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৮৪ সালে বন্দরটি কাস্টমস বিভাগে পরিণত হয়। ১৯৯৭ সালে কাস্টমস হাউসে রূপান্তরিত হয়। ২০০৯ সালে নতুন ভবন নির্মাণের পর বেনাপোল কাস্টমস এবং ইমিগ্রেশন চেক পোস্ট কার্যক্রম শুরু করে।

BM Khalid Hasan Sujon

বেনাপোল স্থল বন্দরের বিপরীতে ভারতের অংশটি পেট্রাপোল নামে পরিচিত। এই স্থল বন্দরের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে পণ্য বাণিজ্য ছাড়াও এই স্থল বন্দর দিয়ে প্রত্যেক দিন শতশত ভ্রমণকারী যাতায়াত করে।

বেনাপোল স্থল বন্দর যাওয়ার উপায়

রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক, রেল ও আকাশ পথে যশোর জেলা শহরে যেতে পারবেন। যশোর জেলা শহর থেকে বাস, প্রাইভেট কার বা ট্রেনে চড়ে শার্শা উপজেলার বেনাপোল স্থল বন্দর যেতে পারবেন। যশোর জেলা শহর থেকে বেনাপোলের দূরত্ব প্রায় ৩৯ কিলোমিটার।

বাসে ঢাকা থেকে যশোর: ঢাকার গাবতলী, কল্যাণপুর, কলাবাগান, নবীনগর বাস টার্মিনাল থেকে শ্যামলী, সোহাগ, হানিফ, টুঙ্গিপাড়া, এম আর, গ্রীন লাইন, ঈগল, দেশ ট্র্যাভেল, ইমাদ, গোল্ডেন লাইন পরিবহনে চড়ে যশোর আসতে পারবেন। এসি/নন-এসি বাস ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৬৫০ টাকা থেকে ১,৫০০ টাকা।

BM Khalid Hasan Sujon

ট্রেনে ঢাকা থেকে যশোর: ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন প্রতি রবিবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সন্ধ্যা ৭ টা ৩০ মিনিটে, বেনাপোল এক্সপ্রেস প্রতি বুধবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন রাত ১১ টা ৪৫ মিনিট, সুন্দরবন এক্সপ্রেস বুধবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সকাল ৮ টা ১৫ মিনিটে এবং রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস প্রতি সোমবার বাদে সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সকাল ১০ টা ৪৫ মিনিটে যশোর ছেড়ে আসে। ট্রেনের সিটভেদে জনপ্রতি টিকেট মূল্য ৪১০ থেকে ১,৯২৭ টাকা।

আকাশ পথে ঢাকা থেকে যশোর: ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ইউএস-বাংলা, বিমান বাংলাদেশ, নভোএয়ার ও এয়ার অ্যাস্ট্রা এয়ারলাইন্সে যশোর বিমানবন্দর আসতে পারবেন। সিট ভেদে জনপ্রতি বিমান ভাড়া ৪,৫০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

বেনাপোল বাংলাদেশ বৃহত্তম স্থলবন্দর হওয়ায় এখানে থাকার অনেক আবাসিক হোটেল ও বাংলাদেশ পর্যটন কর্তৃপক্ষের পর্যটন মোটেল রয়েছে। এর মধ্যে বেনাপোল ইম্পেরিয়াল স্যুট, হোটেল অ্যারেস্ট্রাক্র্যাট আবাসিক, ডায়মন্ড আবাসিক হোটেল, ফ্রেশ আবাসিক হোটেল, নাহিদ আবাসিক হোটেল, হোটেল সনি বেনাপোল, হোটেল পোর্ট ভিউ উল্লেখযোগ্য। বেনাপোল আবাসিক হোটেল সমূহের তথ্য জানুন।

এছাড়া যশোর শহরে থাকার জন্য থাকার জন্য ভালো মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। এগুলো হল হোটেল শাসম ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল, আর.এস ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল সিটি প্লাজা ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি।

BM Khalid Hasan Sujon

আবার মোটামোটি মানের বেশ কিছু আবাসিক হোটেল ও সরকারি গেস্ট হাউজ রয়েছে। এর মধ্যে মনিহার, চৌধুরী, মিডওয়ে, মিডটাউন, ম্যাগপাই, গ্রান্ড হোটেল উল্লেখযোগ্য। যশোর আবাসিক হোটেল মোবাইল নাম্বার সমূহ উল্লেখ করা হয়েছে।

কোথায় খাবেন

বেনাপোল বন্দরের আশেপাশে খাবার জন্য বেশ কয়েকটি খাবার হোটেল রয়েছে। এর মধ্যে হাজী হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, দি সান রোফ, ঢাকা হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, সাকিব হোটেল, নিরামিষ রেস্তোরাঁ, আল-আমিন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্ট, ঘরোয়া হোটেল, শাপলা হোটেল উল্লেখ্যযোগ্য।

এছাড়া খাবার জন্য যশোর অনেক বড় বড় খাবার হোটেল ও রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এগুলো মধ্যে নাজমা হোটেল, নূর হোটেল, লাক্সারি ডাউন, রোজ গার্ডেন, ক্যান্ডেল লাইট ক্যাফে, ক্যাফে ম্যারিওট, জলযোগ রেস্টুরেন্ট উল্লেখ্যযোগ্য।

যশোরের বিখ্যাত খেজুরের গুড়ের প্যারা ও সন্দেশ, জামতলার মিষ্টি, চুক নগরের বিখ্যাত চুই ঝালের মাংস, ধর্মতলার মালাই চা খেতে পারেন। 

যশোরের আশেপাশে আরো দর্শনীয় স্থান

বেনাপোল স্থলবন্দর ছাড়াও যশোরের আশেপাশে অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে। এর মধ্যে ফুলের রাজ্য গদখালি, যশোর কালেক্টরেট পার্ক, ভাসমান সেতু যশোর, বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্ক, যশোর রোড, সাগরদাঁড়ি মধুমেলা, জেস গার্ডেন পার্ক উল্লেখ্যযোগ্য।